বিশ্বনাথে গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্য

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের বিশ্বনাথে গৃহবধূ ফাতেমা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন এ নিয়ে এলাকায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহত ফতেমা বেগম উপজেলার শেখেরগাঁও গ্রামের জামিল আহমদের স্ত্রী। তার পিতার বাড়ী একই উপজেলার আনপুর গ্রামে। নিহতের মায়ের দাবি তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আজ (শুক্রবার) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে স্বামীর বাড়ি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের শেখেরগাঁওয়ে মরদেহ নেওয়া হলেও পঞ্চায়েতি কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি এলাকাবাসী। ফলে ওইদিন সন্ধ্যায় দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সযোগে ওই গৃহবধূর লাশ মানিকপীর টিলায় নিয়ে যান তার স্বামী জামিল আহমদ। ওইদিন রাত ৮টায় সিলেটের মানিকপীর টিলায় দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা পুলিশের এসআই ওসমান আলী স্বামীর বসতঘর থেকে ওই গৃহবধূ ফাতেমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর ময়তা তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। কিন্তু ফাতেমা নিজেই আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে যেমন রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি এলাকায় নানা গুঞ্জন রয়েছে।
স্থানীয় ও এজাহার সূত্রে জানাগেছে, ২০১৮ সালে উপজেলার শেখেরগাঁওয়ের সাইদ আলীর ছেলে জামিল আহমদের সঙ্গে ২য় বিয়ে দেওয়া হয় একই উপজেলার আনরপুর গ্রামের হতদরিদ্র ভিক্ষুক ইলিয়াছ আলীর মেয়ে ফাতেমা বেগমকে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুক না দেওয়ায় প্রায়ই ফাতেমাকে নির্যাতন করা হতো। এনিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়। পরে পরিবারের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হলে সালিশকারীরা বাবার বাড়িতে ফাতেমাকে পাঠিয়ে দেন। প্রায় ৫মাস আগে ফের ফাতেমাকে তার শশুর বাড়িতে নেওয়া হলে আর বাবার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেননি স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। অবশেষে যৌতুকের এক লাখ টাকা না দেওয়ায় ফাতেমাকে তার স্বামী ও শাশুড়ী শ^াসরোধে হত্যা করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তার ভাই রুবেল আহমদ।
সালিশ ব্যক্তিত্ব শাহ্ তোফাজ্জল হোসেন ভান্ডারী এ প্রতিবেদককে বলেন, ফাতেমার স্বামী জামিল আহমদ একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করায় মাসে একবার বাড়িতে আসেন। এই সুযোগে শশুড় সাইদ আলী পুত্রবধূ ফাতেমাকে কু-প্রস্তাব দেন। আর তাতে তাদের পরিবারে কলহের সৃস্টি হয়। এনিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে।
একাধিক সালিশ বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করেছেন গোয়াহরি গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন ও শেখেরগাঁওয়ের সালিশ ব্যক্তিত্ব মছব্বির আলী ও রাশিদ আলী। তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাধ ও একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে।
ফাতেমার স্বামী জামিল আহমদ, শাশুড়ি ও সমন্ধিকের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ঘটনার আগেরদিন ঢাকা থেকে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। আবার পরক্ষণে বক্তব্য পরিবর্তন করে বলেন, চট্রগ্রাম থেকে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। আর বাড়ি ফেরার পরদিন তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
এবিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামীম মুসা বলেন, তবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না। নিহতের পরিবার একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে হত্যার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *