২৩ বছর জেলখাটার পর নির্দোষ প্রমাণিত হলেন পাঁচ ভারতীয় মুসলিম

Uncategorized
শেয়ার করুন

জয়পুর–আগ্রা হাইওয়েতে বোমা বিস্ফোরণ এবং দিল্লির একটি বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৯৯৬ সালে আবদুল গনি, আলী ভাট, লতিফ আহমেদ সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের মধ্যে চারজন কাশ্মীরের বাসিন্দা। অন্য আরেকজন আগ্রার বাসিন্দা। অবশেষে ২৩ বছর জেল খাটার পর নির্দোষ প্রমাণিত হলে গত সপ্তাহে তাদের মুক্তি দেয় রাজস্থান হাইকোর্ট। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে।

এই ২৩ বছর কারাজীবনে পাল্টে গেছে অনেক কিছুই। যৌবনকাল শেষ হয়ে বার্ধক্য এসে হাজির হয়েছে তাদের শরীরে। জেল থেকে বেরিয়ে জম্মু–কাশ্মিরে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান আবদুল গনি, আলী ভাট, লতিফ আহমেদ বাজা এবং নিসার বাগ। প্রমাণ না থাকায় তাদের বিস্ফোরণ কাণ্ডে নির্দোষ ঘোষণা করেছে রাজস্থান হাইকোর্ট। বিস্ফোরণের ঘটনায় মূল আসামি আবদুল হামিদের ফাঁসির সাজা এবং পাপ্পু ওরফে সালিমের যাবজ্জীবন কারদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছে আদালত।

গনি বলেন, তিনি সেখানে আল্লাহওয়ালা নামের একটি সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। যারা বিভিন্ন এলাকায় ধর্ম প্রচারের কাজ করত। সে বছর তিনি দিল্লির একটি মসজিদে গিয়েছিলেন দলের সাথে। সেখান থেকে যান বিশাখাপত্তম। সেখানে ৪০ দিন কাটিয়ে আবার দিল্লি যাওয়ার সময় ট্রেন থেকে তাদের আটক করা হয়। ট্রেনে একদল লোক উঠে সবার নাম ও ঠিকানা জানতে চায়। কাশ্মীরি মুসলিম বুঝতে পারার পর তাকে আটক করা হয়।

পরদিন আহমেদবাবাদের পুলিশ স্টেশনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরই তারা বুঝতে পারে যে, আমি নির্দোষ। এক তরুণ পুলিশ অফিসার আমাকে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশও দেন। কিন্তু ডেপুটি পুলিশ সুপার আমাকে একদিনের জন্য রেখে দিতে বলেন। সেই একদিন শেষ হয়েছে গনির জীবনের মূল্যবান ২৩টি বছর হারিয়ে যাওয়ার পর। সে সময় দিল্লিতেও আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। তারা একজন কাশ্মীরিকে খুঁজছিল ঘটনার সাথে জড়িত দেখানোর জন্য। যদিও আমি কিছুই জানতাম না সে সম্পর্কে।

আলী বলেন, ‘আমরা বার বার বলেছিলাম, আমরা কিছুই করিনি। আমরা নির্দোষ; কিন্তু দিল্লি পুলিশ আমাদের কথা শুনতে চায়নি। শুধুই কী কাশ্মীরি হওয়ার কারণেই এই অত্যাচার?‌ প্রশ্ন উঠেছিল আমাদের মনেও; কিন্তু কেউ আমাদের কথা গুরুত্ব দেয়নি। দেশের নানা কারাগারে আমাদের নিয়ে যেত। বেঁচে থাকার সমস্ত ইচ্ছে চলে গিয়েছিল। আমি যখন নেপালে যাই, তখন আমার বয়স ১৯। আর এত বছর পর গোটা পৃথিবীটাই তো বদলে গিয়েছে, জেলের ভিতর থেকে তো কিছুই বুঝতে পারেনি। মা–বাবাও এখন আর আমার কাছে নেই। কাউকেই পেলাম না! সুক্র ইনকিলাব


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *