স্বাস্থ্য সহকারিদের ধর্মঘটের কারনে হাম রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন অনিশ্চিত

Uncategorized
শেয়ার করুন

ডেক্স রিপোর্ট : সারা দেশের মত সিলেটে স্বাস্থ্য বিভাগের তৃণমূলের কর্মী স্বাস্থ্য সহকারিদের ধর্মঘটের কারনে হাম রুবেরা টিকাদার ক্যাম্পেইন ২০২০ বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য সহকারিগণ তাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে ধর্মঘটের ডাক দিলে কর্মসুচীর অচালবস্থার দেখা দেয়। স্বাস্থ্য বিভাগ পরিবার পরিকল্পপনা বিভাগের কর্মচারিদের দিয়ে এ কর্মসুচী বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে। স্বাস্থ্য সহকারিগণ বিভিন্ন কৌশলে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার কল্যাণ সহকারি, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা, উপ-কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারদের কর্মসুচীতে অংশ গ্রহন না করতে বাঁধা নিষেধ করছেন। বিভিন্ন উপজেলায় হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন প্রশিক্ষণে স্বাস্থ্য সহকারিগণ অংশ গ্রহণ করেননি। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারিগণ অংশ গ্রহন করলেও নামকা ওয়াস্তে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
আগামি ২৯ ফেব্রæয়ারি থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত শুক্রবার ছুটির দিন ব্যতীত হাম রুবেরা ক্যাম্পেইন হওয়ার কথা। সরকার ৯ মাস থেকে ১০ বছরের নিচের সকল শিশুদের এক ডোজ এমআর টিকা প্রদানের মাধ্যমে হাম রুবেলা রোগের বিস্তার দ্রæত হৃাস করার লক্ষ্যে এ কর্মসূচী ঘোষনা করেন। ২ বছর বয়সের নিচের সকল ড্রপ-আউট ও লেফট আউট শিশুদের খুজে বের করে নিয়মিত টিকাদন কার্যক্রমের মাধ্যমে এমআর টিকাদান নিশ্চিত করা এ কর্মসূচীর মূল উদ্দেশ্য। ক্যাম্পেইনের ২ মাস পূর্বে ৯ মাস থেকে ১০ বছরের কম বয়সি শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার কথা। কিন্তু গত ২/৩দিন ধরে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় খোজ নিয়ে রেজিস্ট্রেশন হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। ২৯ ফেব্রæয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত প্রথম সপ্তাহে প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্টানে, ৭ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে নিয়মিত টিকাদান কেন্দ্রে এ ক্যাম্পেইন হওয়ার কথা ছিল।
স্বাস্থ্য সহকারিগণ যে সব দাবি নিয়ে আন্দোলন বা ধর্মঘট করছেন, সেসব দাবির মধ্যে অন্যতম একটি দাবি হচ্চে স্বাস্থ্য বিভাগের যাবতীয় কাগজে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নাম মুছে দেয়া। কারন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাকসীন হিরো পূরস্কারে ভূসীত হওয়ায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারিরা ঢাকা সিলেটে তাদের কাজের সাফল্য স্বরুপ প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো কারনে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারিরা চরম ক্ষুব্ধ। অপর দিকে স্বাস্থ্য সহকারিদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদের সাথে ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সংযুক্ত থাকায় তারা তা বাতিলের ও দাবি করেছেন। যে কারনে দুই বিভাগের মাঠ কর্মচারিরা এখন মুখোমুখি। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও কয়েকজন এফপিআই এফডাবিøউদের সাথে আলোচনা করে জানাযায়, তারা চাকুরিতে যোগদানের পর থেকে ইপিআই, এনআইডি, ভিটামিন এ ক্যাপসুল সহ স্বাস্থ্য বিভাগের অনেক কাজ করে থাকেন। এমনকি দেশের প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে সপ্তাহে ৩দিন দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কেউ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নাম বলতেই অনিহা প্রকাশ করে থাকেন। এমন অবস্থায় দুই বিভাগের কর্মচারিদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে চরম বিরুধ সৃষ্টি হয়েছে। একটি সুত্র জানায়, স্বাস্থ্য সহকারিদের বাদ দিয়ে পরিবার পরিকল্পনা কর্মচারিগণ হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করতে চাইলে দুই বিভাগের কর্মচারিদের মধ্যে যে কোন ধরনের অঘটন ঘটার আশংকা করছেন উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এয়কজন এফপিআই এফডাবিøউ জানান, স্বাস্থ্য সহকারিগণ তাদের দাবি নিয়ে ধর্মঘট করছেন আর সেই কাজ আমাদেরকে দিয়ে করানোর উদ্যোগ সঠিক হচ্ছেনা। স্বাভাবিক কারনেই দুই বিভাগের বিরুধ চরম আকার ধারণ করবে।
সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মন্ডল জানান, ২৯ ফেব্রæয়ারি কর্মসুচী শুরু করতে প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছি। উর্ধতন মহল থেকে কর্মসুচী বন্ধের কোন নির্দেশনা পাইনি। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো জানান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ সব সময় সাহায্য সহযোগিতা করে আসছে। এবারও এ কর্মসুচী সফলে তারা সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য সহকারি সিলেট সমিতির সভাপতি মামুন জানান, সরকার যে মুহুর্তে আমাদের দাবি পূরণ করবে সেই মূহুর্তে আমরা কাজে যোগদান করব। তিনি আরো বলেন, ১৬ তম গ্রেড থেকে ১৪ গ্রেডে এবং স্বাস্থ্য সহকারিদের টেকনিক্যাল পার্সন ঘোষনা করে ১১তম গ্রেড প্রদানের জন্য আমরা বহুদিন থেকে সরকারের নিকট দাবি করে আসছি। স্বাস্থ্য সহকারি সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া একটি প্রোগ্রামে ব্যস্ত থাকায় তার বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *