ডাক ডেক্স : সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা গত ২অক্টোবর বুধবার সিলেট নজরুল ইসলাম অডিটরিয়ামে অনুষ্টিত হয়। অনুষ্টানে উপরোক্ত দুটি ছবিকে কেন্দ্র করে আলোচনা সমালোচনা এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অনুষ্টনের শুরুতেই বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বর্তমান আওয়ামীলীগের সভাপতি পংকি খানকে সাংগঠনিক রিপোর্ট প্রদানে নাম ঘোষনা করেন জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী। নাম ঘোষনার মুহুর্তেই সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ বিগত দিনের প্রকাশিত বেশ কিছু পত্রিকার কাটিং এবং উপরোক্ত ছবি দুটি কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের হাতে তুলে দেন। মাহবুবুল আলম হানিফ খামটি খুলে পড়েন এবং ছবি দুটি দেখে রাগাম্বিত হয়ে সভার সভাপতি লুৎফুর রহমানের সাথে চুপে চুপে কিছু কথা বলেন। তার পর ছবি দুটি নুরুল ইসলাম নাহিদ, মন্ত্রী ইমরান আহমদ দেখেন। এসময় পংকি খান বক্তব্য দিতে চাইলে ফারুক আহমদ তীব্র আপত্তি করেন। পংকি খান তার বক্তব্যে বলেন, আমি সভা ডাকলে ফারুক আসেনা, এজন্য তাকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে দায়িত্ব দিয়ে দল পরিচালনা করছি। এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্টানের পেছন থেকে দলীয় নেতা কর্মীরা কাউয়া, দালাল, অনুপ্রবেশকারি বলে চিৎকার করতে থাকেন। তখন পংকি খানের বক্তব্য থামিয়ে দেয়া হয়।
এ সুযোগে অনুষ্টানের প্রধান অতিথি তোফায়েল আহমদ মঞ্চে আসন গ্রহন করার পরই পূণরায় ফারুক আহমদ আরেকটি খাম তোফায়েল আহমদের হাতে তুলে দেন। নিখোজ ইলিয়াস আলীও ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানের সাথে পংকি খানের ছবি দেখে প্রচন্ডভাবে ক্ষীপ্ত হন। তিনিও মঞ্চের সকলকে ছবিগুলো দেখান। বক্তব্যের এক পর্যায়ে মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েছ শফিক চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, বিশ্বনাথ ফেঞ্চুগঞ্জ নিয়ে যখন জটিলতা আছে তখন প্রথম দিকে বক্তব্য দিয়ে অনুষ্টানে বিশৃংখলা সৃষ্টি করা অদক্ষতার পরিচয়। এমরান আহমদ এমপি বলেছেন, সিলেটে সাংগঠনিক দূর্বলতার কারনে দলে মারাত্বক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। মাহবুবুল আলম হানিফ তার বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ব্যর্থতার দায় দায়িত্ব নিয়ে অনেক আগেই পদত্যাগ করা উচিৎ ছিল। কেউ কেউ গঠনতন্ত্র না জেনে মুখের কথায় একে অপরকে বাদ দিচ্ছেন শুনতে হাসি লাগে। তিনি অনুপ্রবেশকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে হুসিয়ারি উচ্চারন করেন।
বক্তব্যের এক ফাঁকে পংকি খান সভাস্থল ত্যাগ করেন। তোফায়েল আহমদ বক্তব্য শুরু করলে সভাস্থলে পিনপতন নিরবতা শুরু হয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে তার আদর্শের রাজনীতির বিষদ ব্যাখ্যা দেন। এক পর্যায়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের চেয়ে কর্মীদের স্নেহ ও বিশ্বাস করতেন বেশি। অনুষ্টানে দুটি ছবি দেখে খুব কষ্ট পেয়েছি। আওয়ামীলীগের কর্মী এমন করতে পারেনা। কেন্দ্রীয় নেতারা আছেন, তারা বিহীত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তার দীর্ঘ বক্তব্যের সময়ের ফাঁকে উপরোক্ত ছবি দুটির কপি দর্শক গ্যালারিতে ঘুরতে থাকে। এক পর্যায়ে টেলিভিশন সাংবাদিকরা দুটি ছবিকে রেকর্ড করেন। দলীয় নেতা কর্মীরা ছিঃ ছিঃ নিলর্জ কাউয়া-কাউয়া বলেও চিৎকার করতে থাকেন। মুলত এদুটি ছবি অনুষ্টানে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের চরমভাবে ক্ষুব্ধ ও ক্ষীপ্ত করে তোলে।
উল্লেখ্য যে, দলীয় হাই কমান্ডের হাতে ইতিমধ্যে অনুপ্রবেশকারি কাউয়াদের প্রায় দেড় হাজার তালিকা রয়েছে। যে কোন সময় এদের বিরুদ্ধে এ্যাকশন শুরু হবে। বিশ্বনাথের ত্যাগী নেতাকর্মীরা অনুপ্রবেশকারি, রাজাকার ও রাজাকার পুত্রদের আওয়ামীলীগ থেকে বের করে দেয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ সহ বার বার প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি করে আসছেন।