ষড়যন্ত্রকারীদের অব্যাহত ষড়যন্ত্র রুখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে আজ সোমবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভার সূচনা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র যেমনি আগেও ছিল তেমনি এখনও আছে। বাতাসে এখনও ষড়যন্ত্রের গন্ধ আছে। যেকোনো অপশক্তির বিষদাঁত ভেঙে দিতে পারে আমাদের ইস্পাতকঠিন ঐক্য। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এবং ষড়যন্ত্রকারিদের মূলোৎপাটনে ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের প্রেরণার দ্বীপশিখা। আসুন, এ ভাষণ জাতিকে যেভাবে’ ৭১-এ ঐক্যবদ্ধ করেছিল, সে রকম দুর্ভেদ্য ঐক্য প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা সমৃদ্ধ আগামী বির্নিমাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার হাতকে করি শক্তিশালী।
আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতি হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা-মূল্যবোধের অনেক কিছুই বিকৃতির নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্রের আবহে বদলে ফেলা হয়েছিল। আর এরই সঙ্গে ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার-প্রসারে তৈরি করা হয়েছিল প্রতিবন্ধকতা। এ ভাষণ বাজানোতে ছিল অলিখিত নিষেধাজ্ঞা।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে ৭ মার্চের ভাষণ বাজানোর অপরাধে জীবন দিতে হয়েছে, হতে হয়েছে নির্মম অত্যাচারের শিকার। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের জানা ছিল না, যে ভাষণের মূলমন্ত্র মানবমুক্তি ও সাম্যের বাণী, যে ভাষণ কালজয়ী হয়ে অভয় বাণী শোনায় সেই ভাষণ কোনো প্রকিবন্ধকতা দিয়ে রোখা যায় না। বরং প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ঐতিহাসিক ভাষণটি শুনে আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মদীপ্ত হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের মহান আদর্শে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ পূর্বপরিকল্পিত বা লিখিত ছিল না। এটি ছিল তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর শোষণ-বৈষম্য নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক অমোঘ দলিল। এটি জাতির দীর্ঘ দিনের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বেরিয়ে আসার অনন্য মর্মবাণী। ৭ই মার্চের ভাষণে এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সামরিক কৌশল ও রাজনৈতিক আন্দোলন সংঘটন ইত্যাদি ক্ষেত্রে চিরকাল ও সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের ৭ই মার্চ এসেছে ভিন্ন ব্যঞ্জনায়, ভিন্ন মাত্রায়। যে ভাষণের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন রূপ নেয় স্বাধীনতা সংগ্রামে। যে ভাষণ বাঁকবদল করে যুদ্ধপ্রস্তুতির, সে ভাষণ ভীত রচনা করে নবস্বপ্নে জাগরণের, সে স্বপ্নে অর্ধশত বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিলো প্রত্যাশার জাগানিয়া স্ফুরণ, আর অর্ধশত বছর পর তারই সুযোগ্য কন্যা যে প্রত্যাশা পূরণের সোনালী দিগন্তের উন্মোচক।