ডাক ডেস্ক : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেছেন, দুর্যোগ মানুষের জীবনকে সংগ্রাম করতে শেখায়, ভালোবাসা শেখায়। দুর্যোগময় মুহূর্ত মোকাবেলায় বর্তমান সরকার সব সময় প্রস্তুত। দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তায় বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মডেল।
সব ধরনের দুর্যোগে মানুষের পাশে দাড়ায়। দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সঠিক তথ্য দিয়ে জনগণকে বুঝাতে হবে। শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজের জন্যও কিছু করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশকে সারাবিশে^র মধ্যে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করে তুলেছেন। তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে, অভাবনীয় উন্নতি সাধিত হয়েছে। আগামী ৪১ সালের মধ্যে এদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে সকলকে এক যোগে কাজ করতে হবে। তিনি শুধু দুর্যোগ মোকাবেলা নয়, দেশের কল্যাণে সরকারের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনসাধারণকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহবান জানান।
মহাপরিচালক ৬ নভেম্বর সোমবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সম্মেলনে কক্ষে স্কেলিং আপ ফোরকাস্ট-বেইজড অ্যাকশন এন্ড লার্নিং ইন বাংলাদেশ (সুফল) কার্যক্রম সম্প্রসারণ সম্পর্কিত অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হোসাইন মোহাম্মদ আল জুনায়েদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তৌসিফ আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এএসএম কাশেম, সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম, সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন শিহাব।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, সামগ্রিক দুর্যোগ মোকাবিলায় অবশ্যই সরকার এবং উন্নয়ন ও মানবিক সংস্থাসমূহের সমন্বয় একান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইড বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর আফসারী বেগমের সঞ্চালনায় কর্মশালায় সিলেট জেলার উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণ, সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিগণ, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণ এবং হিউম্যানিটারিয়ান সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হিউম্যানিটারিয়ান এন্ড রেজিলিয়েন্স, কেয়ার বাংলাদেশ এর ডেপুটি ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় দাস।
সুফল’র লক্ষ্য ও ফলাফল সমূহ উপস্থাপন করেন সুফল, কেয়ার বাংলাদেশের কনসোর্ডিয়াম কোঅর্ডিনেটর কাজী রাবেয়া এমি। উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইড প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জ্যোতিরাজ পাত্রা।
উল্লেখ্য, সুফল একটি কনসোর্টিয়াম প্রকল্প যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশন্স (একো) এর অর্থায়নে কেয়ার বাংলাদেশের নেতৃত্বে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং রাইমস এর অংশগ্রহণে বাস্তবায়িত হচ্ছে। হাওড়াঞ্চলে পূর্বাভাসভিত্তিক সাড়াদান কার্যক্রমের মূল্যায়ন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে এই ধারণাটি এখনো যথেষ্ট নতুন। আকস্মিক বন্যা ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস জনগণের কাছে যথাযথ সময়ে পৌছেনা; পূর্বাভাসের প্রেক্ষিতে আগাম কার্যক্রম গ্রহণের কোনো সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা এবং পূর্বনির্ধারিত কোনো অর্থায়ন ব্যবস্থা নেই।
এরই ফলশ্রুতিতে এবং প্রকল্পের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মৌসুমী বন্যাপ্রবণ এলাকায় পূর্বাভাসভিত্তিক সাড়াদান কার্যক্রম বাস্তবায়নে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আকস্মিক বন্যা এবং বজ্রপাত প্রবণ হাওর এলাকায় ‘সুফল’ এর কার্যক্রম প্রসারিত করছে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও বগুড়ার পাশাপাশি এই প্রকল্পটি এখন সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনায় পূর্বাভাসভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে। সুফল প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্যই হলো কমিউনিটি এবং প্রতিষ্ঠানসমূহের পূর্বাভাসভিত্তিক কার্যক্রমে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাস করা।
ইতোমধ্যেই প্রকল্পটি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রভাবভিত্তিক পূর্বাভাস প্রদান এবং মৌসুমী বন্যার ক্ষেত্রে বর্ধিত সময়ে পূর্বাভাস প্রদানে কাজ করছে। প্রকল্পটি আগামীতে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাথে আকস্মিক বন্যার আগাম সতর্কতা উন্নত করতে এবং স্থানীয় সময়ে বজ্রপাতের পূর্বাভাস প্রদানে কাজ করবে। পূর্বাভাস উন্নীত করার সাথে সাথে প্রকল্পটি আগাম কার্যক্রম গ্রহণে অর্থায়নেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।