নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনাথ উপজেলার ৪নং রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল একটি বিশাল গ্রাম। এ গ্রামটির দিকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দৃষ্টি রয়েছে। একই গ্রামে বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধির জন্মের কারনে কিছুদিনপূর্বে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহেনার নজরে যায় এই গ্রামের প্রতিবন্ধির বিষয়টি। সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিকবার এই গ্রামে ছুটে আসেন। ইতিমধ্যে প্রতিবন্ধিদের জন্য বিভিন্ প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছে।
১০ মার্চ বৃহস্পতিবার এই প্রতিনিধি একই গ্রামে কি কারনে এত প্রতিবন্ধির জন্ম, এমন তথ্য জানতে অনুসন্ধানের জন্য আমতৈল গ্রামে যান। কয়েকটি বাড়ী ঘুরে বিস্ময়কর এক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়। যে কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলেন, তাতে দেখা যায় এসব পরিবার ৪জনের মধ্যে কমপক্ষে ১জন বাক প্রতিবন্ধি, শ্রবণ প্রতিবন্ধি, মানসিক প্রতিবন্ধি, জন্মগত প্রতিবন্ধি, শারীরিক প্রতিবন্ধি, হৃদরোগ, প্যারালাইসেস, শ্বাস কষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে রয়েছেন। অনেক ঘরে গাদাগাদি করে মানুষের বসবাস। একজনের ঘরের সামনে অপরজনের ঘরের পিছন সাইট। ময়লা, আবর্জনায় এক দুগর্ন্ধময় নিরব পরিবেশ চলছে।
বেলা ১টার দিকে আমতৈল বাজারের দক্ষিণে পশ্চিম দিকে একটি বাড়ীতে প্রবেশ করা মাত্রই একজন তরুণের কান্না ‘ও ভাই, আমারে বাচাঁও, আমি ছাইটা ভাত খাইতাম, আমারে দেখরেবা’। কয়েকজন ছোট শিশু এই প্রতিনিধিকে বাধা দেয়, সামনে যাবেন না, পাগল। পায়খানায় বেঁধে রাখা হয়েছে। তাদের কথা না শুনেই একটু এগিয়ে দেখি, একটি খোলা লেট্রিনে উলঙ্গ অবস্থায় পায়খানার মধ্যে আলিম উদ্দিন নামের সুদর্শন এক তরুণকে বেধে রাখা হয়েছে, তার বয়স অনুমান ২৩/২৪হবে। এ লেট্রিনে দিবানিশি দশ দিন তাকে বেঁেধ রাখা হয়েছে। ছবি তুলতে চাইলে, আলিমুদ্দিন জানায়, ছবি তোল ভাই, আমারে ভাত খাওয়ায়, আমার পেটে খিধা লাগছে। বসে বসে পায়খানা খাচ্ছে। আমার কাছে তাঁকে জটিল প্রতিবন্ধি বলে মনে হয়নি। মানুষ কি মানুষের প্রতি এমন আচরন করতে পারে। এই ভাবনায় আমি মনের অজান্তে কেঁদে ফেলি। আমার সঙ্গে থাকা হুমায়ুন আমাকে ফেলে পালিয়ে যায়। পায়খানার গন্ধে সে বমি করতে থাকে। আলিমুদ্দিনের আত্মীয়রা জানালেন, তার ভাই আফাজ উদ্দিন (৫০), জয়নাল আবেদিন(৩৫)ও বোন রেহেনা সহ এই পরিবারের চারজনই তারা প্রতিবন্ধি। বোঝা যাচ্ছে পুরো আমতৈল গ্রাম এলাকায় একটি মানবিক বিপর্যয় ঘটছে। যারা নিজেকে মানবিক, মানবতাবাদী, সমাজসেবক বলে দাবী করেন, তারা আমতৈল গ্রামে চলে যান, মানুষের পাশে দাঁড়ান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি পারেন আলিমুদ্দিনকে উদ্ধার করেন। কারণ, সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে নাই। আমি আসার পর আলিমুদ্দিনের স্থান পরিবর্তন হতে পারে। তবে আমার ছবিতো কথা বলবেই। বিস্তারিত পরের প্রতিবেদনে………………