মহামান্য হাইকোর্টে সাইফুলের জামিন নামঞ্জুরঃ ট্রাইবুনালে বিচার দাবী

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোটার: বিশ্বনাথের চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্র সুমেল হত্যা মামলার প্রধান আসামী চাউলধণী হাওর খেকো অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী সাইফুল আলমের জামিন পুনরায় না মঞ্জুর করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট। এ নিয়ে হাইকোর্ট ও সিলেট জেলা জজে কয়েক দফা তার জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করা হয়। পবিত্র ঈদুল-আযহার সুযোগে সাইফুল মহামান্য হাইকোর্টে জামিনের সুযোগ নিতে চেয়েছিল। (টেন্ডার নং ৩১২২৫/২০২২ এবং সিরিয়েল নং ১৯০)। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টে একটি ব্যাঞ্চে আজ ৩০ জুন জামিনের সুনামী শেষে তার জামিন না মঞ্জুর করেন। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন মামলার বাদী ইব্রাহীম আলী সিজিল। মামলার বাদী পক্ষে সিলেটের নিযুক্ত আইনজীবী এ এস এম গফুরও জামিনের আবেদন না মঞ্জুর হওয়ায় সত্যতা স্বীকার করেন।
বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ও দশঘর ইউনিয়নে মধ্যবর্তী প্রায় দশ হাজার একর ভুমি বেষ্টিত প্রখ্যাত চাউলধনী হাওরটি চৈতন নগর গ্রামের মৃত আফতাব আলীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম দশঘর মৎসজীবী সমবায় সমিতির নিকট থেকে সাবলিজ নিয়ে হাওর পারের মানুষের পুকুর খাল জলাশয় জোর পূর্বক দখল করে মাছ ধরতে থাকে। প্রথম পর্যায়ে হাওরের পারের ২৫টি গ্রামের কৃষকরা কোন টু শব্দ না করলে এক পর্যায় অতিষ্ট হয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। ২০২১ সালের ১লা মে চৈতন নগর গ্রামের নজির উদ্দিনের জমিতে ভেকু মেশিন দিয়ে জোরপূর্বক মাটি কাটা শুরু করে। জমির মালিক পক্ষ তাতে বাদা দিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বন্দুক পিস্তল সুলফি ঝাটা দিয়ে সাইফুল ও তার বাহিনী হামলা শুরু করে। তখন বন্ধুকের গুলিতে চৈতন নগর গ্রামের মামলার বাদী ইব্রাহীম আলী সিজিলের ভাতিজা সুমেল গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যায়। এ ঘটনায় সুমেলের বাপ চাচা সহ ৫জন গুলি বৃদ্ধ হন। হত্যাকান্ডের পর সাইফুল থানা সদরে ঘুরাফেরা করলেও তৎকালীন ওসি শামীম মুসা আসামীকে গ্রেফতার করেননি। প্রভাবশালী একটি মহল তাকে বিদেশ পাঠানো ও মামলা থেকে রক্ষায় নানা রকম চেষ্টা তদবি করে। ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে সিলেট, বিশ্বনাথে, প্রতিবাদ মিছিল সমাবেশ সাংবাদিক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।
অবশেষে গতবছর ১৯সেপ্টেম্বর ঢাকা রমনা থানার পাশে একটি বিল্ডিং থেকে বাদী পক্ষ সাইফুলকে আটক করে রমনা থানায় সোপদ করেন এবং বিশ্বনাথ থানা পুলিশ তাকে সিলেটে নিয়ে এসে জেলহাজতে প্রেরন করেন। বর্তমানে সাইফুল ১১ মাস যাবৎ ধরে জেলহাজতে রয়েছে। বিশ্বনাথ থানার প্রাক্তন ওসি (তদন্ত) রমাপ্রশাদ চক্রবর্তী সাইফুলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বর্তমানে তিনি বালাগঞ্জ থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাদী পক্ষসহ এলাকাবাসী এই চাঞ্চল্যকর শিশু হত্যা মামলাটি বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচারের জন্য সরকারের প্রতি দাবী করে আসছেন।
চাউলধনী হাওর রক্ষা ও কৃষক বাচাঁও আন্দোলন কমিটির আহবায়ক আবুল কালাম বলেন, আসামীরা অত্যন্ত চালাক চতুর ও প্রভাবশালী তারা এই হত্যা কান্ডের বিচারের যেকোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। তাই দ্রুত বিচার ট্রাইব্রুনালে মামলাটি স্থানান্তর করে বিচার দাবী করছি। ভিকটিম সুমেলের চাচা নজির মিয়া বলেছেন, আমরা ঘটনার পর থেকে হত্যাকান্ডের সুষ্টু তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবী করে আসছি। মামলার যেহেতু চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে মামলাটি ট্রাইব্রুনালে স্তানান্তরের দাবী করছি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *