নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বনাথ উপজেলার (তেলিকোনা) এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইনকে বিধিবহির্ভূত ও বেআইনিভাবে জোরপূর্বক চার মাসের ছুটি দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ, সরকারি কাজে ও দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে বাধা, প্রাণে হত্যার হুমকিসহ মাদরাসার এডহক কমিটি কর্তৃক জঠিলতা সৃষ্টির কারনে সর্বোচ্চ আদালত অবমাননার মামলা করা হতে পারে।
এ ধরনের মামলা দায়ের করা হলে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাসহ এডহক কমিটি ফেঁসে যেতে পারেন। এ নিয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে।
মাদরাসার কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের ২০ মার্চ মাদরাসার এডহক কমিটির আহবায়ক নিজামুল ইসলাম বিধিবহিভূর্তভাবে প্রতিহিংসামুলক অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক বাধ্যতামুলক চারমাসের ছুটি দেখিয়ে কারন দশানোর নোটিশ জারী করেন। নোটিশের জবাব না দেয়ায় ২৬ মার্চ অধ্যক্ষকে লাঞ্চিত করে মাদরাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়ে অফিসকক্ষ তালাবদ্ধ করা হয়।
এসব ঘটনায় উপজেলা ও জেলা প্রশাসনে প্রতিকার চেয়ে অধ্যক্ষ আবেদন-নিবেদন করলেও কেউ সাড়া দেননি। নিরুপায় হয়ে অধ্যক্ষ মহামান্য হাইকোটে রিট পিটিশন ১২৬/২০২৩ দায়ের করলে শুনানী শেষে মহামান্য হাইকোটের দুইজন বিচারপতি চারমাসের ছুটি ও কারন দশানোর নোটিশ অবৈধ ঘোষণা করে ছয়মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এই আদেশের খবর পেয়ে এডহক কমিটির আহবায়ক নিজামুল ইসলাম তাঁর চাচাতো ভাই মাদরাসা শিক্ষক মখলিছুর রহমানকে দিয়ে মহামান্য সুপ্রীমকোটে হাইকোটের আদেশ স্থগিতাদেশের জন্য পিটিশন ২৮/২০২৩ দায়ের করলে, মহামান্য সুপ্রীমকোট, কোন আদেশ না দেয়ায় হাইকোটের আদেশ বহাল রাখেন।
মহামান্য হাইকোটে দায়েরি বিচারাধীন ১২৬/২০২৩ মামলার সময় বাড়ানোর জন্য রিটকারীর আইনজীবি আবেদন করলে, মহামান্য হাইকোটের বিচারপতি খছরুজ্জামান ও খায়রুল আলম আবেদন মঞ্জুর করে চলতি বছর ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বর্ধিত করেন। এ ছয় মাসের স্থগিতাদেশের সার্টিফাইড কপির ছায়ালিপি বিশ্বনাথের ডাক ২৪ডটকম অফিসে রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে অধ্যক্ষকে মাদরাসায় ঢুকতে না দেয়া, শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা, জুলাই মাসের বেতন বন্ধ করা, আইনি সহায়তা না দেয়াসহ সকল কর্মকান্ডই আদালত অবমাননার সামিল।
গত ১৬ আগষ্ট ৫৪২নং স্মারকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান এক তদন্ত প্রতিবেদনে বিধিবহিভূতভাবে আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং বোর্ড কর্তৃক এডহক কমিটি অকার্যকর করার চেষ্টায় অধ্যক্ষ লিপ্ত রয়েছেন মর্মে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাদরাসা বোর্ডের রেজিস্টার্ড বরাবরে পত্র দিয়েছেন। অধ্যক্ষ আবু তাহির মোহাম্মদ হোসাইন জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে একাধিকবার থানায় আইনি সহায়তা চাইলেও সহযোগিতা পাননি। পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষকে লাঞ্চনা ও তাকে সরকারি কাজে বাধা প্রদানের ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েগেছে।
অধ্যক্ষের রিটকারী হাইকোটের এডভোকেট আব্দুল কাইয়ুম টেলিফোনে জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়মাস সময় বর্ধিত করেছেন মহামান্য হাইকোট। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তেও যারা প্রতিহিংসামুলকভাবে এবং আর্থিক সুবিধা না পেয়ে অধ্যক্ষকে অপমান, দায়িত্বে কর্তব্যে বাধা দান এবং হয়রানী করছেন, তাঁরা সবোঁচ্চ আদালতকে অবজ্ঞা করেছেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করবো এবং প্রস্তুতিও গ্রহণ করছি।