নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিশ্বনাথ উপজেলা চাউলধনী হাওর রক্ষা ও কুষক বাচাও আন্দোলনের আহবায়ক, বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সদস্য আবুল কালাম চাউলধনী হাওর লীজ গ্রহিতাদের পক্ষের একটি সাজানো মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন। তিনি জেলে ডুকার পর পরই চাউলধনী হাওরের ডাবল মাডারের আসামীরা এবং তাদের বাহীনী মওখালী বিল নামে একটি জলাশয়ে সেচ দিয়ে মাছ ধরা শুরু করে। সাজানো মামলা ও খুনখারাবির বয়ে ভূমির মালিকরা বাদা আপত্তি করতে পারছে না। চাউলধনী হাওর পারের প্রায় ২৫টি গ্রামের কৃষক নিয়ে আবুল কালাম আন্দোলন শুরু করলে প্রশাসনের সহায়তায় তার বিরুদ্ধে ৪/৫টি সাজানো মামলা দায়ের করা হয়। কয়েকটি মামলা থেকে অব্যহতি পেলেও একটি মামলায় তিনি হাজত বাস করছেন। এ নিয়ে হাওর এলাকায় ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
চাউলধনী হাওরে দুটি হত্যাকান্ডের পর আরো এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।গত ৩০জানুয়ারি বিকেলে চাউলধনী হাওর থেকে আসক আলী (৬০) নামের এক বৃদ্ধের লাশও উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের বাড়ি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামে। নিহতের পুত্র বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। (মামলা নং-০২, তারিখ ০৩-০২-২৩ইং)।
চাউলধনী হাওর জলমহাল গ্রুপটি বিশ্বনাথ দশঘর মৎসজিবী সমবায় সমিতি লীগ গ্রহণ করলেও সাবলীজ গ্রহীতা একদল সন্ত্রাসী বাহিনী হাওরে কৃষকদের খাল-বিল দখল করে তান্ডব চালাচ্ছে। ইতিপূর্বে কৃষক ছরকুম আলী দয়াল ও স্কুল ছাত্র সুমেলকে দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেছে এ বাহিনী। এ দুটি হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি সাইফুল জেল হাজতে থাকলেও বাকি আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে বহিরাগত কিছু লোকের সহায়তায় পূণরায় হাওর দখল শুরু করেছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি শুত্রবার দশপাইকা, চানপুর মীরগাঁও গ্রামের পাশে মৌ-খালি নামক বিলে একদল লোক সেচ মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিয়ে মাছ ধরেছে। লীজের কাগজে দেখা গেছে সরকারি ভাবে মৌখালি বিল লীজ দেয়া হয়নি। এ বিলে মসজিদ ও কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর, খাল-বিল ও জলাশয় রয়েছে। হাওর রক্ষা ও কৃষক বাঁচাতে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সদস্য আবুল কালাম যিনি সর্বোচ্চ ত্যাগ করে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তাঁকে অনেকগুলো সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে হওরানী করা হচ্ছে। বেশ কিছুদিন পূর্বে কামার গাঁও গ্রামের মৎমজীবি সমিতির সদস্য জুনাব আলী বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করে, (মামলা নং-৬, তারিখ ০৯-১০-২২ইং)। এ মামলায় আবুল কালাম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে শুনানী শেষে আদালত জামিন না মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন। আবুল কালামের আইনজীবি এএসএম গফুর জানিয়েছেন, ৭দিন পূর্ণ হওয়ার পর পূণরায় জামিনের আবেদর করবেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মামুন জানান, ৩১জানুয়ারি এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। দশঘর মৎসজীবি সমবায় সমিতি হাওরটি লীজ নিয়ে লীজের শর্ত ভঙ্গ করে সাবলীজ দেয়ায় হাওরে ৩টি হত্যকান্ড ঘটেছে।
এদিকে কৃষকদের পক্ষ থেকে মহামান্য হাইকোর্টে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জলাশয়ের সাথে কৃষকদের ভুমি চিহ্নিত করার জন্য আবুল কালাম বাদি হয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। আদালত রিট মঞ্জুর করে সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দিলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোন টনক নড়ছেনা। ফলে হাওর এলাকায় একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ইনকিলাবকে বলেন, হাওর জরিফের জন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে। সহকারি কমিশনার ভুমি আছমা জাহান বলেন, জরিপের কাজ চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে আছমা জাহান বলেন ডিসি অফিস থেকে সীমানা নির্ধরণের কোন সময় সীমা দেয়া হয়নি।