স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে সোমবার সকাল ১১টায় সাংসদ মোকাব্বির খানের উপর হামলা ও জুতা নিক্ষেপের ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। থানা পুলিশ বলছে তারা এ ঘটনায় এখও কোন অভিযোগ পায়নি। সাংসদ মোকাব্বির খানের ভাষ্য, পুলিশ প্রটোকলে তার উপর হামলা করা হয়েছে, সুতরাং তিনি কোন অভিযোগ দেয়া অনর্থক। আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পার হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক আওয়ামীলীগের সভাপতি দাবিদার পংকি খান তার বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়ি করে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারিদের গ্রেফতার না করলে তিনি আইনশৃঙ্খলা কমিটি ও আওয়ামীলীগ বর্জন করবেন বলে ঘোষনা করেন। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়ি করে বলেন, এমপির নিরাপত্তা দিতে না পারলে কেন সভায় আনলেন। তার এমন বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড ফেইসবুকে রয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলাকারি হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলামও সাংকৃতিক বিষয়ক সম্পাদককে অভিযুক্ত করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সিরাজুল ইসলাম আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনের পর তিনি পদত্যাগও করেছিলেন।
সাংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের উপর হামলার সংস্কৃতি বিশ্বনাথে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সাবেক সাংসদ মুক্তিযুদ্ধা শাহ আজিজুর রহমান ও শফিকুর রহমান চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমানের উপর হামলার ঘটনা আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরিন কোন্দলের কারনে ঘটেছিল। ২০১৫ সালে উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের পূর্বে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম ফিরোজ আলীর বাসার সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় উপজেলা আওয়ামীলীগের আরেক নেতা রশির আহমদকে বাসিয়া ব্রিজের উপর হামলা করে তাকে নদীতে ফেলে হত্যার চেষ্টা করেছিল। হামলাকারিরা সবসময় সরকারি দলের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে থাকে এবং তারা অর্থের বিনিময়ে ভাড়ায় এসব কর্মকান্ড করে থাকনে।
(১০ আগষ্ট) আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় উপজেলা পরিষদের চর্তুরদিকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু হামলার ঘটনা যখন ঘটে তখন পুলিশ নিরব দর্শক ছিল। সুত্র মতে এসময় উপজেলা পরিষদ এলাকায় সিসি ক্যামেরাও বন্ধ ছিল। সব কিছু মিলে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কারনে এ ঘটনা ঘটে। সাংসদ মোকাব্বির খানকে সামনে রেখে একজন পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন, এমন আশায় বিএনপি ও ঐক্য ফ্রন্টের মোকাব্বির খানের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলা হয়। এই সখ্যতার সংবাদে ক্ষীপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া, আগামি সংসদ নির্বাচনে মোকাব্বির খানকে ডিঙ্গিয়ে নিজে সাংসদ হওয়ার খায়েস পূরণ করতে গিয়ে তার অফিসে শোক সভার আয়োজন করলে পরিকল্পিতভাবে সাংসাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করা হয়। এতে সাধারণ মানুষ চরমভাবে ক্ষুব্ধ। বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আহমদ মতছিন ক্ষুব্ধকন্ঠে বলেন, কতিপয় সুবিধাভোগী অর্থের বিনিময়ে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পংকি খানকে আওয়ামীলীগের সভাপতি বানিয়ে সংগঠনের ১২টা বাজিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে কমিটি স্থগিত করলেও টাকার লোভিরা জোড়াতালি দিয়ে বিএনপিকে পূর্ণবহাল করা হয়েছে। আমরা বার বার প্রধানমন্ত্রী সহ দলের উর্ধতন কর্মকর্তার নিকট অনুপ্রবেশকারিদের তালিকা সহ বিস্তারিত তুলে ধরেছি। এখন দল রক্ষা করতে হলে অনুপ্রবেশকারিদের বহিস্কার করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের হাতে সংগঠনের দায়িত্ব তুলে দিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।