বিশ্বনাথে সন্ত্রাসী ঘটনা : থানা পুলিশের বিস্ময়কর কান্ড

বিশ্বনাথ সারাদেশ সিলেট
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের বিশ^নাথ উপজেলার মৌলভীরগাঁও গ্রামে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলিকরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনায় মামলার ফাইন্যাল রিপোর্ট দাখিল করেছে থানা পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকায় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

গত ২২সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য প্রবাসি লেবু মিয়ার নিজের ভুমির বাড়ির রাস্তার উপর নির্মিত বিলাস বহুল গেইটটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজন সিলেট থেকে ভাড়া করা অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীদের নিয়ে আসা হয়। লেবু মিয়ার লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে থানা পুলিশকে অবহিত করেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরী করলে পুলিশ তদন্ত শেষে গেইট ভাঙ্গার সত্যতা পেয়ে এডিএম আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল করে। কিন্তু বিষয়টি জেনে শোনেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

ঘটনার তারিখ ও সময়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ও ভাড়াটিয়া অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীরা গ্রামে প্রবেশ করে গুলিছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে গেইটের সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে প্রায় ২ঘন্টায় গেইটটির অধিকাংশ ভেঙ্গে দেয়। বিষয়টি বারবার পুলিশকে অবহিত করলে বিলম্বে ওসি জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং বাদী পক্ষ আসামিদের অস্ত্রসহ দেখিয়ে দিলেও বলা হয় থানায় অভিযোগ দেয়ার পর তদন্ত করে আসামি গ্রেফতারের বিধান রয়েছে। মৌখিক কথায় আসামি গ্রেফতার করা যায়না। এ ঘটনায় লেবু মিয়ার চাচাত ভাই জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে তুফায়েল আহমদকে প্রধান আসামি করে সিলেটের দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করলে আদালত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। মামলাটি তদন্ত করেন সাব ইন্সপেক্টর গাজি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি তদন্তে মোট ১২জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন। প্রত্যেক স্বাক্ষী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ঘটনার বর্ণনা দেন। কিন্তু তদন্তকারি কর্মকর্তা প্রত্যেক স্বাক্ষিতেই গেইট ভেঙ্গে পুলিশ আসার আগে আসামিরা পালিয়ে যায় বলে উল্লেখ করেন। আদালতে দাখিলকৃত রিপোর্টের এক পর্যায়ে বলাহয়, মামলাটি সাবিক তদন্তকালে স্বাক্ষ্য প্রমানে ঘটনার পারিপাশি^ক অবস্থা বিশ্লেষনে বাদীর আনিত অভিযোগ ১৪৩/৪২৭/৫০৬/৩৪ চুড়ান্ত রিপোর্ট সত্য ধারার অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় এবং শেষ পর্যায়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে অত্র মামলার অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় আসামিদের মামলার দায় হইতে অব্যাহতি আবেদন করিলাম। অজ্ঞাতনামা আসামিদের অদুর ভবিষ্যতে সঠিক নাম ঠিকানা পাওয়া গেলে আইগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হইবে।

বাদীপক্ষ ঘটনার পর থেকেই পুলিশের নানামুখি আচরনের সন্দেহ ও সন্ত্রাসীদের সাথে অলিখিত চুক্তির মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। ফলে জয়নাল আবেদীনের মামলা দায়েরের পরই পুলিশের পরামর্শে আসামিদের পক্ষে সাইকুল ইসলাম বাদী হয়ে একই ধারায় আদালতে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তকারি কর্মকর্তা সেই মামলাটির চুড়ান্তরিপোর্ট দাখিল করেছেন। প্রকাশ্যে দিবালোকে বন্দুক দিয়ে গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মামলাটি ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করায় পূূরো বিশ^নাথ এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *