নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমি, নদীর তীর, জলাশয় জবরদখল, হাট বাজারসহ নদীর তীরবর্তীস্থানের সরকারি জমিতে গাছ কেটে নেয়া হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। এমনকি বিশ্বনাথ থানা সদরের নতুন ও পুরাতন বাজারে প্রশাসনের নাকের ডগায় বাসিয়া নদীর চর দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখল করে রাখলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
কিন্তু একজন প্রবাসীর বোন নদীর চর ভরাট ভূমিতে গাছ রোপন করে লাকড়ীর জন্য কয়েকটি গাছ বিক্রি করায় যুক্তরাজ্য প্রবাসীর বিরুদ্ধে থানায় একটি সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিশ্বনাথ থানার মামলা নং-২২, তারিখ- ২৭/০২/২০২২ইং, ধারা ৪৪৭/৩৭৯/৪২৭| খালেদ আহমদ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ সাজানো মামলা দায়েরের পর বিলপার গ্রামে এলাকাবাসী একাধিক বৈঠক করে মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানী বন্ধে দাবী জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষে একটি স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়েছে। স্মারকলিপি পাঠ করে বিভাগীয় কমিশনার বিস্মিত হয়ে পড়েন এবং ব্যবস্থা গ্রহণে এলাকাবাসীকে আশ্বাস দেন। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন আব্দুর রহমান ও জালাল উদ্দিন।
জানা যায়, উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের দ্বীপবন্ধ প্রকাশিত বিলপার গ্রামের মৃত হরমান আলীর পুত্র ইন্তাজ আলী ছোটবেলা থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন। তাঁর বড় বোন ৭৫বছর বয়সী সোনাবান বেগম ইন্তাজ আলীর বাড়ীতে থাকেন। সোনাবান বিবি নদী ভাঙ্গনে যাওয়া চর ভরাট ভূমিতে কয়েকটি গাছ লাগান এবং কিছুদিন পূর্বে ঐ গাছগুলো অন্যলোকের নিকট লাকড়ির জন্য বিক্রি করেন। কয়েকদিনপূর্বে প্রয়াগমল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা খালেদ আহমদ ইন্তাজ আলীর বাড়ীতে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গাছ কাটার মামলা দায়েরের হুমকি দেন এবং তাকে যদি ৫০হাজার টাকা এবং বিশ্বনাথ সহকারি কমিশনার ভূমিকে আরো ৫০হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন। এতে ইন্তাজ আলী অপারগতা করেন। পরদিন ইন্তাজ আলী তার স্ত্রী, বোনকে নিয়ে বিশ্বনাথ সহকারি কমিশনার (ভুুমি) আসমা জাহান সরকারের অফিসে গেলে আসমা জাহান সরকার বিভিন্ন ধরনের অপমানজনক কথাবর্তা বলে তাদেরকে অফিস থেকে বের করে দেন। তখন ইন্তাজ আলী তাঁকে বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, গাছ কাটার ঘটনার সাথে তিনি কোনমতই জড়িত নয়। এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। কিন্তু তারপর মামলা দিয়ে তাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। এমতাবস্থায় সহজ সরল ইন্তাজ আলী ও তার পরিবার মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
এলাকাবাসী স্মারকলিপিতে অতিসত্ত্বর প্রবাসী রেমিটেন্সযোদ্ধার বিরুদ্ধে সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত ইন্তাজ আলী জানান, গাছ রোপন ও কতৃনের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি তপশীলদারকে জানিয়েছিলাম, সরকারি জায়গায় যদি আমার বোন গাছ রোপন ও কাটা ভূল হয়, তাহলে আপনাদের মালামাল নিয়ে যান। কিন্তু আমি তাদের দাবী অনুযায়ী টাকা না দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেয়া হয়েছে।