ডাক ডেক্স : সিলেটের বিশ্বনাথে গণধর্ষণের শিকার হয়ে গলায় ওড়না পেছিয়ে এক যুবতী আত্মহত্যা করেছে বলে চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য পাওয়া গেছে। যুবতির নাম পপি বেগম (১৯)। সে অলংকারী ইউনিয়নের লালটেক গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে। দাফনের ২দিন পর পপির বেগমের ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে তার মা জোসনা বেগম একটি চিরকুট (সুইসাইড নোট) পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
পপি বেগম গণধর্ষণের শিকার হয়েই আত্মহত্যা করেছেন বিশ্বস্থ সূত্রে এমন তথ্য পেয়ে রবিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিকরা নিহতের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ বসতঘর থেকে পপি বেগমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন ‘‘বিশ্বনাথে যুবতীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার’’ শিরোনামে বিশ্বনাথেরডাক ২৪ ডটকম-এ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পপি বেগম গত (৬অক্টোবর) রবিবার বেড়াতে যায় বড় বোন হেপি বেগমের স্বামীর বাড়ি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী ইউনিয়নের চেরাগী গ্রামে। সেখান থেকে রবিবার (১৩ অক্টোবর) তাকে বাড়িতে নিয়ে আসার কথা থাকলেও গত বৃহস্পতিবার সকালে পপি নিজ বাড়িতে চলে আসতে কান্না কাটি শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে ওই দিন দুপুরে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন ভগ্নিপতি ফয়জুল ইসলাম।এদিকে ফয়জুল ইসলামের বড় ভাই নুরুল ইসলাম তেতলী পয়েন্টে গিয়ে লোকমূখে জানতে পারেন তার ভাইয়ের শালিকা পপিকে রাতে বাহিরে পেয়ে চেরাগী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) নামের এক যুবক বাড়িতে পৌছে দেয়। এমন সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক লালটেক গ্রামের পপির বাড়িতে ছুটে আসেন নুরুল ইসলাম এবং তিনি পপির সাথে একান্তে আলাপ করে রাতে কোন ঘটনা ঘটেছে কি না তা জানতে চান। কিন্ত পপি তাকে কিছুই না বলায় তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে যান এবং শুনতে পান পপি আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে বৃহস্পপতিবার বিকেলে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। এরপর ময়না তদন্ত শেষে পরদিন শুক্রবার নিহতের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
নিহতের মা জোসনা বেগম জানান, আজ রবিবার (১৩ অক্টোবর) মেয়ে পপি বেগমের ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগ হাতে নিয়ে তিনি মেয়ের রেখে যাওয়া স্মৃতি দেখতে গিয়ে ওই ব্যাগের মধ্যে পপির নিজ হাতে লেখা একটি কাগজ দেখতে পান। এসময় তিনি প্রতিবেশী লোকজনকে ওই কাগজটি দেখান। তখন কাগজ পড়ে জানতে পারেন গণধর্ষণের শিকার হয়ে লজ্জায় তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
জোসনা বেগম জানান, তার মেয়ে পপি বেগমের নিজ হাতে লেখা ওই কাগজ (সুইসাইড নোট) পড়ে তিনি জানতে পারেন গত বুধবার দিবাগত রাতে বোনের বাড়িতে অবস্থানকালে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে পপি বেগম ঘরের বাহিরে যায়। তখন পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা দুই ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং তার মুখ, হাত ও পা বেঁধে মারধর করে রাতভর পাশবিক নির্যাতন করে। এরপর ভোর রাতে পপিকে বোনের বাড়িতে (যেখান থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়, সেই স্থানে) ফেলে রেখে যায় ওই দুই ব্যক্তি। তবে ওই দুই জনকে পপি চিনতে পেরেছে এবং তাদের নামও সুইসাইড নোটে সে উল্লেখ করেছে বলে জোসনা বেগম জানান।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, নিহতের পরিবারের মৌখিক অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।