মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় জার্মানি-ফ্রান্স ম্যাচ তখনো শুরু হয়নি। গা গরম করছিলেন ফুটবলাররা। হঠাৎ আকাশে দেখা গেল একটি হলুদ রঙের প্যারাসুট। বোঁ বোঁ করে তীব্রগতিতে নিচে নেমে আসছে। আরেকটু কাছাকাছি আসার পর বোঝা গেল, প্যারাস্যুটে যে ব্যক্তি আছেন, মাটিতে পতনটা তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই। কোথায় নামবেন কে জানে!
ইউরোয় কাল বাংলাদেশ সময় রাতের শেষ ম্যাচের আগে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। উয়েফা জানিয়েছে, প্যারাস্যুটে করে আকাশ থেকে নেমে আসা সেই ব্যক্তি ঠিক জায়গায় পড়তে পারেননি। তাঁর কারণে একাধিক লোক আহত হয়েছেন এবং হাসপাতালেও যেতে হয়েছে। প্যারাস্যুটের ওপরে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘গ্রিনপিস’ ও ‘তেল বর্জন করুন’ লেখা ছিল। এতে ম্যাচ শুরু হতে কিছুক্ষণ দেরি হয়। মিউনিখ পুলিশ জানিয়েছে, প্যারাস্যুটে নেমে আসা ৩৮ বছর বয়সী সেই জার্মানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘নানা রকম আইন ভাঙা’র দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে মিউনিখ পুলিশ।
ওপর থেকে নামার সময় স্টেডিয়ামের ওপরে স্পাইডারক্যামের তারে বেধে যায় তাঁর প্যারাস্যুট। এতে প্যারাস্যুট আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। আরেকটু হলেই তিনি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আছড়ে পড়তে পারতেন। গ্যালারির আসন ঘেঁষে যাওয়ার সময় তাঁর কারণে দুজন ব্যক্তি মাথায় গুরুতর আঘাত পান এবং তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওদিকে প্যারাস্যুটে থাকা ব্যক্তিটিও কোনোমতে ‘ক্রাশ ল্যান্ডিং’ এড়াতে সক্ষম হলেও মাঠে গিয়ে পড়েন। শারীরিকভাবে তিনি অক্ষতই ছিলেন। প্যারাস্যুট নিয়ে তিনি নেমে আসার সময় ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশমকে মাথা নিচু করে বসে পড়তে দেখা যায়।
মিউনিখ পুলিশ জানিয়েছে, ‘আকাশযানটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেশ কিছু নিয়ম ভাঙায় অপরাধী আইনে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’ গ্রিনপিস এই ঘটনার দায় নিয়ে বলেছে, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে চালককে মাঠের ভেতর নামতে হয়। বিপদ ডেকে আনা এবং আঘাত করার জন্য আমরা গভীরভাবে মর্মাহত।’ টুইটে গ্রিনপিস জানিয়েছে, ইউরোর মধ্যে তাদের এই প্রতিবাদ জার্মানির গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগনের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটির ডিজেল ও পেট্রলচালিত গাড়ি বিক্রির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে গ্রিনপিস। বাভারিয়ান প্রধানমন্ত্রী মার্কাস সোডার জানিয়েছেন, এ ঘটনাকে হালকা করে দেখার উপায় নেই। জার্মানির বিপক্ষে ১-০ গোলে ম্যাচটি জিতে নেয় ফ্রান্স।