অনলাইন ডেস্ক :: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সিলেটের বেশিরভাগ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দেখা মিলছে না। অনেকে চলে গেলেন আত্মগোপনে। এতে করে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সেবা-পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জনগণ। ব্যাহত হচ্ছে নাগরিক সেবা কার্যক্রম। জনপ্রতিনিধিদের আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেটের ১৩ উপজেলার মধ্যে ১১টিতে আওয়ামী পন্থী চেয়ারম্যান রয়েছেন। তদের মধ্যে বেশিরভাগই এখন ‘আত্মগোপনে’ রয়েছেন। অনেকেই দেশত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত অফিসে আসেননি বেশিরভাগ চেয়ারম্যানরা। মোবাইলও বন্ধ করে রেখেছেন অনেকে।
স্থানীয়রা বলছেন- সরকার পতনের পর থেকে চেয়ারম্যানদের দেখা মিলছে না। অনেকের মুঠোফোনও রয়েছে বন্ধ। কেউ কেউ অফিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে অনেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা ও নিজের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকার কারণে এখন পর্যন্ত আত্মগোপনে রয়েছেন।
আত্মগোপনে’ থাকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেন- সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজাত আলী রফিক, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শামীম আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. মজির উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশফাকুল ইসলাম সাব্বীর এবং জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান উদ্দিন চৌধুরী। তবে লোকমান চৌধুরীর দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ থাকায় অফিস করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম পল্লব নিয়মিত অফিস করছেন। আর দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) থেকে অফিস করতে শুরু করেছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া বিশ্বনাথ ও গোয়াইনঘাটে বিএনপি পন্থী চেয়ারম্যান থাকায় তারা নিয়মিত অফিস করছেন বলে জানা গেছে।
আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানদের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, তারা অফিস করছেন না হামলা ও সহিংসতার আশঙ্কায়। কারণ এই মুর্হুতে পুলিশ আইনশৃঙ্খরা নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে না।
এদিকে, বিভিন্ন জায়গায় ইউনিয়ন পরিষেদর চেয়ারম্যানরাও নিয়মিত অফিস করছেন না বলে জানা গেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছেন চরম বিপাকে।
এ ব্যাপারে আত্মগোপনে থাকা বেশিরভাগ চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।