নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ৮টি ইউনিয়নের ৪৩৮টি গ্রামের মধ্যে প্রায় ৩০০টি গ্রাম বন্যা কবলিত ছিল। পানি কমছে, মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে। অধিকাংশ কাচা-পাকা রাস্তা পানির স্রোতের তোড়ে ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পানি বাহিত রোগ, ডায়েরিয়া, আমাশয়, সর্দি, জ¦রে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। গত দুদিনের রোদে ময়লা আবর্জনা পচে দুগন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে অসুখ-বিসুখ বাড়তে পারে। উপজেলার সকল কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পরিবার কল্যাল কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ঔষধসহ রোগ ব্যাধি প্রতিরোধে প্রস্তুত রাখতে হবে। পানির নিচে তলীয়ে যাওয়া গভীর-অগভীর, নলকুপগুলো অকেজো হওয়ার আশংকা রয়েছে। সার, বীজ সংকটের কারনে আগামি আউশ আমন ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলে উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। সরকারের পাশাপাশি প্রবাসিরা এ বিষটি বিবেচনা করতে পারেন।
বন্যায় বিশ্বনাথ-লামাকাজী সড়কের আতাপুর পয়েন্ট, কাজিবাড়ী, নলকট, উদয়পুর সড়ক, পরগনা বাজার-আকিলপুর, রাজাপুর সড়ক, রাজাগঞ্জ বাজার-খাজাঞ্চি সড়ক, ভোলাগঞ্জ-প্রীতিগঞ্জ বাজার সড়ক, বৈরাগী বাজার-সিংগেরকাছ সড়ক, নকিখালি-মৌভলীগাঁও-সিংগেরকাছ সড়ক, বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর, কালিগঞ্জ বাজার-সৎপুর সড়ক, বাগিচা-গোদামঘাট, হাবড়া ছালিয়া সড়ক এবং বিশ্বনাথ বাইপাস সড়কস প্রায় শতাধিক সড়ক ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃস্টি হয়ে। এসব সড়কে পায়ে হেঁটে চলা মশকিল হয়ে পড়েছে। এদিকে উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, বন্যায় ৮০০টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে প্রায় ৮০লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। পোল্ট্রি ফার্ম ও হাঁস-মোরগের খামারগুলোর মালিকদের মারাত্বক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় বলেন, দুই দফা বন্যায় এ এলাকার ১৩হাজার ৬৮২জন কৃষকের ১৯হাজার ৭৯হেক্টর আউশ, বীজতলা ও সবজির জমি তলিয়ে গেছে। কৃষিখাতে প্রায় ২০-২২কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ৮৮কিলোমিটার সড়ক ও বেশ কয়েকটি ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতে প্রায় ১০০কোটি টাকা প্রয়োজন। এছাড়াও কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির পরিমান হবে প্রায় ৩০কোটি টাকা।
বিশ্বনাথ আঙ্গারুকা নির্মানাধীণ ব্রিজের কাজ মন্তর গতি হওয়ায় বিশ্বনাথ জগন্নাথপুর সড়কে যান চলাচলে অচালবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসি কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব সৈয়দ আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাটের মেরামত ও কৃষি পূঃবাসন কর্মসুচী গ্রহণ করা হবে।