অনলাইন ডেস্ক ::
“এ সংকট তৈরির পেছনে যে বা যারা জড়িত তা অনুসন্ধান করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে”, বলেন প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো নিয়ে সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
এ ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার দুপুরে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন ।
শফিকুর বলেন, “সমস্যা সমাধানে অ্যাম্বাসি ও মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ সংকট তৈরির পেছনে যে বা যারা জড়িত তা অনুসন্ধান করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার পরও বিমানের টিকেট না পাওয়ায় অন্তত ৩০ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি বলে ধারণা দিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম।
৫-৬ লাখ টাকা দিয়েও অনেকে যেতে পারেনি। ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েও অনেকেই টিকেট পায়নি, বলছেন তিনি।
মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সে দেশে যাওয়ার অনুমোদন পাওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের প্রবেশের শেষ দিন ছিল ৩১ মে। কর্মী ভিসায় আর কেউ সেখানে ঢুকতে পারবেন না।
এই সুযোগে কিছু এজেন্সির যোগসাজশে এই রুটে ভাড়া ৩০ হাজার টাকা থেকে কয়েক গুণ বেড়ে লাখ টাকার বেশি হয়ে যায়।
এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেকে শুক্রবার সকাল থেকে বিমানবন্দরে আসতে থাকেন। যেসব এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি, তারাই ডেকে আন তাদের। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিমানবন্দরে উৎকণ্ঠিত মানুষের ভিড় দেখা যায়।
সংকট লাঘবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরে একটি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করে। কিন্তু তাতে সর্বোচ্চ ২৭১ জন যাত্রীর মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ মেলে।
দিনভর অবস্থান করে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে রাতে কয়েকশ মানুষ বিমানবন্দর থেকে ফিরে যান।
বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, গত ২১ মে পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ৫ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৪ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমোদন দেয়। ২১ মের পর অনুমোদন দেওয়ার কথা না থাকলেও মন্ত্রণালয় এর পরেও আরও ১ হাজার ১১২ জনকে অনুমোদন দেয়।
অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫ লাখ ২৪ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশি মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মালয়েশিয়া চলে গেছেন ৪ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৫ জন।
বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদন পেয়েও ৩১ হাজার ৭০১ জন মালয়েশিয়া যেতে পারেনি।
শনিবার সন্ধ্যায় সংগঠনটির মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কতজন যেতে পারেননি সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য কাল (রোববার) জানা যেতে পারে।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫ লাখের উপরে কর্মী প্রেরণের জন্য মালয়েশিয়া সরকার কোটা দিয়েছিল। সেই কোটা পূরণে কাজ করেছিল বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে কাদের ভিসা হয়েছে, আর কাদের ভিসা হয়নি সেই তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংগঠন সেই তালিকা দিতে পারেনি।
“পরবর্তীতে ফ্লাইটের সমস্যা দেখা দেয়। তবে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য ২২টি বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়। একইসঙ্গে মালয়েশিয়া সরকারকে সময় বাড়াতে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো সেই চিঠির উত্তর আসেনি।”
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, “শনিবার বিমানবন্দরে কোনো ভিড় ছিল না। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।