বিরোধীদল কে হবে– বিদেশি সাংবাদিকের প্রশ্নে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক জাতীয় সারাদেশ
শেয়ার করুন

ডাক ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে নির্বাচনোত্তর মতবিনিময় করেন। সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশি এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছেন– গণতন্ত্রে বিরোধী দলের প্রয়োজন হবে। এ ব্যাপারে আপনি কি ভাবছেন?

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে ছিল, বিরোধী দলে ছিল। নিজেদের দল গঠনে কেউ যদি ব্যর্থ হয়, তার জন্য দায়ী কে?

সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদেশি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন।

ভারতের টেলিগ্রাফের এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রী করেন– নির্বাচন শেষ হয়েছে। আপনি যখন গণতন্ত্রের কথা বলছেন, তখন আপনার বিরোধী দলের প্রয়োজন হবে। এ ব্যাপারে আপনি কি ভাবছেন?

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনি কি চান আমি একটি বিরোধী দল গঠন করি? আমি তা করতে পারি? আমি নিজেও বিরোধী দলে ছিলাম দীর্ঘ সময়। আমরা আমাদের দল গঠন করেছি। বিরোধীদেরও তা করতে হবে। আপনি যদি তা করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তার জন্য কে দায়ী?’

এর আগে বিবিসির এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন– বিএনপির অনুপস্থিতিতে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। তবে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোটার ভোট দেয়নি। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ– সরকার দেশে গণতান্ত্রিক চর্চার পথ সীমিত করেছে। বাংলাদেশে গতিশীল গণতন্ত্র বিদ্যমান থাকবে কি না?

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেকোনো বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রত্যেকটা রাজনৈকিত দলের অধিকার। যদি কোনো দল নির্বাচনে অংশ না নেয়, তার মানে এই না সেদেশে গণতন্ত্র নেই, দেখতে হবে নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করেছে কি না।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে সরকারপ্রধান পাল্টা প্রশ্ন রাখেন– ‘তারা কী করেছে? অগ্নিসংযোগ করছে, মানুষ পুড়িয়ে মারছে। কিছুদিন আগেও ট্রেনে আগুন দিয়ে মায়ের কোলের শিশুসহ চারজন মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। এটা কী গণতন্ত্র?’

তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। কিন্তু, যখন কেউ সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে… এটা কী রাজনীতি? এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এদেশের মাটিতে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। জনগণ কখনও তা মেনে নেবে না। একবার না, এদেশে মাটিতে তারা বহুবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।’

এর আগে মতবিনিময় সভায় বক্তব্যে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে জনগণ যে ভোট দিয়েছে, নির্বাচিত করেছে এবং আমাদের অনেক স্বতন্ত্রও নির্বাচিত হয়েছে। অন্যদলগুলোরও বেশকিছু নির্বাচিত হয়েছে। এই দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে এবং নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছি। এ বিজয়টা হচ্ছে জনগণের বিজয়। এ বিজয়টা আমার বিজয় না।’

জনগণের সরকার গঠন করবার অধিকার ও ক্ষমতা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেটা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছি জনগণের ভোটের অধিকার সেটা তারা নিজেরা প্রয়োগ করবে সেটা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। নির্বাচনটা যে অবাধ, সুষ্ঠু হতে পারে সেই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে পেরেছি। আপনাদের আগমন আমাদের দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের অধিকারটা আরও সুরক্ষিত হয়েছে। আপনারা যার যার দেশে ফিরে যাবেন, বাংলাদেশের কথা বলবেন। আপনাদের আগমন আমাদের গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থাকে আরও মজবুত ও শক্তিশালী করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন হয়ে গেছে, এখনও গেজেট হয়নি। তাই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। গেজেটের পর শপথ হবে, এরপর আমাদের সংসদীয় দলের বৈঠক করতে হবে। সেখানে সংসদীয় দলের নেতা কে হবে সেটা নির্বাচন করতে হবে। তখন সরকার গঠন করতে রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে হবে। সরকার গঠন হবে। এটাই সংবিধানিক প্রক্রিয়া, তা অনুসারী করতে চাচ্ছি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *