ডাক ডেস্ক : সিলেট নগরের বন্দরবাজার থেকে মাহফুজ আহমদ (৩০) নামে এক যুবককে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করে ৪ জন। এ ঘটনায় সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) চার কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্ট মধুবন সুপার মার্কেটের সামনে থেকে মাহফুজকে তুলে নেওয়া হয়। তাকে উঠিয়ে নিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখা হয় নগরের দক্ষিণ সুরমার পারাইরচক সিসিকের ময়লার ভাগাড়ে (ডাম্পিং ইয়ার্ডে)।
অপহৃত মাহফুজ আহমদ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের সহিদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রেপ্তাররা হলেন-সিলেট উপহশর এলাকার শাহরিয়ার আহমদ( ২৪), চারাদিঘীর পাড় এলাকার রাজা মিয়া (২৫), জিন্দাবাজার মিতালী ম্যানশন এলাকার সিয়াম আহমদ, সদর উপজেলার খাদিমনগর এলাকার তারেক আহমদ (২৫)। গ্রেপ্তাররা সিলেট সিটি করপোরেশনে অস্থায়ী কর্মচারী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকেলে ডিবি পরিচয়ে নগরের কোর্ট পয়েন্ট সংলগ্ন মধুবন মার্কেটের সামনে থেকে মাহফুজ আহমদ উঠিয়ে নেওয়া হয়। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরের দক্ষিণ সুরমার পারাইরচক সিসিকের ডাম্পিং ইয়ার্ডে। সেখানে হাত-পা বেঁধে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে রেখে মারধরও করা হয়। পরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে মাহফুজের বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনাটি সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। এরপর অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হন স্বজনরা।
শুক্রবার গভীর রাতে অপহরণকারীদের দুইজন সদস্য মাহফুজকে বন্দরবাজার এলাকায় নিয়ে আসে। টাকা লেনদেন করতে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে এবং মাহফুজকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জড়িত অপর দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধারের পর মাহফুজকে চিকিৎসার্থে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, গ্রেপ্তাররা সিলেট সিটি করপোরেশনে অস্থায়ী ভিত্তিতে অস্থায়ী কর্মচারী। অপহরণকালে তারা নিজেদের প্রথমে ‘সিটি পুলিশ’ পরিচয় দিয়েছিল। মাহফুজের স্বজনরা বুঝতে না পারায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। অপহরণের ঘটনায় শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে মাহফুজের ভাই পারভেজ আহমদ (৩৪) বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তার চারজনই সিসিকের ডে-লেবার। তারা অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করে আসছিল। গ্রেপ্তার হওয়ায় তারা চাকরি ফিরে পাবে না।
তিনি বলেন, সিসিকে ৩শ’ ডে-লেবার আছে। কাউন্সিলর কার্যালয়ে আছে ১০ জন করে। অস্থায়ী ভিত্তিতে দেড় হাজারেরও বেশি লোক কাজ করছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিসিকে স্থায়ী-অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে দাগি অপরাধি আছে কিনা, তা কখনো যাচাই করা হয়নি। অবশ্য এ ঘটনায় সিসিকের মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। যে কারণে স্থায়ী-অস্থায়ী, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে যারা কাজ করছেন, তাদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নেওয়া হবে।