ডাক ডেস্ক : চিকিৎসক সংকট নিয়ে চলছে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো। কোন কোন ইউনিয়নে সুরম্য ভবন আছে, কিন্তু চিকিৎসক নেই। আবার কোনটিতে কাগজেপত্রে চিকিৎসক আছেন, নেই উপযুক্ত ভবন বা চিকিৎসা সরঞ্জাম।
উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে রয়েছে ১১টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং মনতলাতে রয়েছে একটি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে একটিতেও নেই এমবিবিএস চিকিৎসক।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারিভাবে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে রয়েছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। এই কেন্দ্রগুলোতে একজন করে এমবিবিএস চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু ১১টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বছরের পর বছর নেই কোন চিকিৎসক। কাগজেকলমে যে ৮টি কেন্দ্রে চিকিৎসক রয়েছেন তাদের কেউ থাকেন অনুপস্থিত। কেউ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে না গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকুরি করছেন, কিংবা অনুমতি ছাড়াই ছুটি কাটাচ্ছেন মাসের পর মাস। কোন কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন স্বাস্থ্য সহকারী থাকলেও বেলা ১টার পর তাদেরকেও পাওয়া যায় না। ফলে গ্রামের সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার জন্য দৌড়াতে হচ্ছে উপজেলা বা জেলা সদর হাসপাতালে। এমতাবস্থায় সরকারের ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা’ স্লোগানটি স্লোগানেই থেকে যাচ্ছে।
প্রতিদিনই ৫০/৬০ জন রোগী এমবিবিএস চিকিৎসক ঔষধ ও না পেয়ে উপজেলা বা জেলা সদর হাসপাতালে যায় বলে জানা যায়।
মনতলা উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় প্রায় প্রতিদিনই তালাবদ্ধ, মাঝেমাঝে খোলা থাকলেও এই কেন্দ্রে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর। লোকবল সঙ্কটের কথা বলে অধিকাংশ সময় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ থাকে। প্রতিদিনই রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে চিকিৎসা না পেয়ে এসে ফিরে যান। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকায় একাই দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান চৌমুহনী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা রোকসানা আক্তার।
তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে জনবল সংকটের কথা।
মাধবপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোর জন্য এমবিবিএস ডাক্তার, উপ–সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, আয়া, নৈশ প্রহরী সহ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা সহ ৫টি পদ রয়েছে। এ পদ গুলোতে মোট ৩৬ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ২০ জন। কিন্তু বর্তমানে বেশির ভাগ কেন্দ্রে শুধুমাত্র পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা কর্মরত আছেন। বাকি পদগুলো খালি আছে। জনবল সংকটে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা।
মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইশতিয়াক আল মামুন জানান, উপজেলায় চিকিৎসক সংকট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কর্তৃপক্ষ।