আন্দোলনের ‘ভয়ে’ বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে না বলে যে কথা বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, তা ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
বুধবার সংসদে বিরোধী দলের এমপিদের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ তো সারাজীবন আন্দোলন করেছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। কারা তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে?
“জনবিচ্ছিন্নদের আন্দোলন নিয়ে আমরা ভয় পাব, এটা হাস্যকর।”
করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর গত বছরের ১৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সরকার থেকে বলা হচ্ছিল, সংক্রমণের হার কমলে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।
সংক্রমণের হার কমায় দেড় বছর বাদে স্কুল ও কলেজ এই সপ্তাহেই খুলে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ২৭ সেপ্টেম্বরের পর খোলা যাবে বলে সরকার জানিয়েছে। তবে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন সংগঠন।
বুধবার সংসদে বিরোধী দলের কয়েকজন সদস্য বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনের ‘ভয়ে’ বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে না।
তাদের বক্তব্যের পর কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিলের উপর আলোচনায় জবাব দেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, মহামারীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ফলে ‘খুব একটা’ সেশনজট হবে না।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬ ভাগ শিক্ষার্থী বেকার থাকেন এমন পরিসংখ্যান নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে কলেজগুলো রয়েছে, সেখানে আমাদের জনপ্রতিনিধিদের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়েছে দীর্ঘদিন একবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে অনার্স ও মাস্টার্স করবার অবকাঠামো নেই, শিক্ষক নেই যোগ্যতা সম্পন্ন, সেখানেও অনার্স-মাস্টার্স খুলে যত্রতত্র সনদ দেওয়ার। তার জন্য আমরা জনপ্রতিনিধিরাই অধিকাংশ দায়ী।”
এই ‘খারাপ’ দিক কাটিয়ে উঠতে মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনেকগুলো শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান আছে, অনেকগুলো খুবই ভালো প্রতিষ্ঠান, সেগুলো ছাড়া বাকিগুলোতে মাস্টার্সের বিষয় থাকবে না। সেখানে অনার্স থাকবে, বিএ, বিএসসি, বিকম সেগুলো থাকবে। ডিপ্লোমা করানো হবে। যাতে তারা বিভিন্ন কর্মে যুক্ত হতে পারেন।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে সংসদ সদস্যদের সভাপতিত্বের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন বলে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি দীপু মনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দীর্ঘ ভেটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা চূড়ান্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত যে অভিযোগ এসেছে। তা খুব হাতেগোনা।”
এপ্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “অনেক সময় দেখা যায়, ভিসির মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে, তখন অনেকই নতুন ভিসি হতে চান, সেকারণে যিনি দায়িত্বে থাকেন তার সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন তোলবার জন্য নানান কথা তুলে ধরা হয়।”
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতার একটি নীতিমালা করে দেওয়া হয়েছে ইউজিসির মাধ্যমে। ইউজিসির সক্ষমতার বৃদ্ধির জন্যও কাজ করছি। আশা করি, খুব শিগগিরই এটা সংসদে উঠবে।”
প্রাথমিক সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, “পিইসি ও জেএসসি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট আমাদের ব্যাপার নেই। আমরা নতুন শিক্ষাক্রমে যাচ্ছি। সেই অনুযায়ী যেটা যুগোপযোগী আমরা ঠিক সেইভাবেই করব।”