বিশ্বনাথে মৎস্য কর্মকর্তার শাস্তিমুলক বদলিঃ অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা

Uncategorized
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওরের কৃষক হয়রানী, অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দায়িত্ব-কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ভূইয়া’কে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। তিনি বিশ্বনাথে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার পদে থাকলেও তাকে ডিমোশন দিয়ে কোম্পানীগঞ্জে বদলি করা হয়। এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদ। ১৮ আগষ্ট বুধবার সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে তদন্তকালীন সময়ে তিনি এ তথ্য জানান। আবু সাঈদ জানান, চাউলধনী হাওরের বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অনিয়ম, দুর্নীতি, দায়িত্ব-কর্তব্য’র অবহেলার অভিযোগের বিষয়টি ইতিপূর্বে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে জেনে তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে মর্মে জানান। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু সাঈদ লিখিত ও মৌখিকভাবে স্বাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। স্বাক্ষীগণ অভিযোগ করে বলেন, মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম চাউলধনী হাওরের সাবলীজ গ্রহিতা সাইফুল বাহিনীর সাথে আতার্ত করে বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে একটি সাজানো মিথ্যা রির্পোট উর্ধ্বতন মহলে প্রেরণ করেন। সাইফুল বাহিনী হাওর শুকিয়ে কৃষকদের মালিকানাধীন জায়গায় মাছ ধরে ও চলতি বছর শতকোটি টাকার ইরি-বোরো ফসলের ক্ষতি করলেও রির্পোটে তিনি লীজ ও সাবলীজ গ্রহিতাদের দায়ী করেননি এবং হাওর উন্নয়নের নামে সরকারি বরাদ্ধ ৬৪লাখ টাকা যতসামান্য কাজ করে তছনছ করেন। হাওরে কৃষকের ভূমিতে মাটি কাটতে স্থানীয় সাংসদ ও পুলিশ প্রশাসন বাধা আপত্তি দিলেও অর্থ লোভে এই কর্মকর্তা অতিগোপনে মাটি কাটা শুরু করেন। ফলে গত ১লা মে সাইফুল ও তার বাহিনী গুলি করে স্কুলছাত্র সুমেল এবং ২৮ জানুয়ারী ছরকুম আলী দয়ালকে হত্যা করে। এ দায় মৎস্য কর্মকর্তা কোনভাবেই এড়াতে পারেন না! মৎস্য আইনে জলাশয় লীজ নিয়ে সাবলীজ দেওয়া হলে সরাসরি লীজ বাতিল হওয়ার আইন রয়েছে। কিন্তু মৎস্য কর্মকর্তা এই আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজের ফায়দা হাসিল করেছেন। চাউলধনী হাওর শুকিয়ে গেলেও মৎস্য কর্মকর্তা তার রির্পোটে ৪/৫ফুট পানি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। মৎস্য কর্মকর্তা অমৎস্যজীবিদের মৎস্যজীবি বানিয়ে দশঘর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি গঠনে বে-আইনিভাবে সহায়তা করেন। একজন মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরনের কর্মকান্ড নজির বিহীন বলে স্বাক্ষীরা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানান। তদন্তকালে স্বাক্ষীপ্রদান করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও চাউলধনী হাওর রক্ষা ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহবায়ক আবুল কালাম, দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আরিফ উল্লাহ সিতাব, কমিটির যুগ্ম আহবায়ক নজির উদ্দিন, মাওলানা ছমির উদ্দিন, সামুছুদ্দিন মেম্বার, সফিক আহমদ পিয়ার, সুমেল হত্যা মামলার বাদী ইব্রাহিম আলী সিজিল ও আফজল হোসেন প্রমুখ। তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু সাঈদ শীঘ্রই উধ্বর্তন মহলে তার তদন্তরির্পোট প্রেরণ করবেন বলে স্বাক্ষীগণ জানিয়েছেন।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *