স্টাফ রির্পোটার: বিশ্বনাথ উপজেলা পৌর আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন নিয়ে ব্যাপকভাবে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রথম গঠিত এই কমিটিতে কে হচ্ছেন আহবায়ক ? এ নিয়ে আওয়ামীীগ পরিবারে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কিছু নেতা কমিটিতে মাইম্যান ঢুকানোর সব ধরনের চেষ্টা তদবির করছেন। বিশ্বনাথ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম নিয়ে পৌরসভা ঘোষণা দিয়ে গেজেট ঘোষণা করেন সরকার। সাংগঠনিক দিক দিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের পরেই থানা সদরস্থ পৌর কমিটির গুরুত্ব অনেক বেশি। যে কারনে আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাদের চেয়ে জামাত-বিএনপির লোকরা এই কমিটিতে অর্šÍভুক্ত হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অনেকের খায়েস হয়েছে পৌর কমিটির আহবায়ক হওয়ার জন্য। দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোন মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। বিভিন্ন কমিটিতে জামাত-বিএনপির লোকজনের অনুপ্রবেশ ঘটছে। যারা বিএনপির জামাতের হাতে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তাদেরকে এখন কেউ চিনে না। এখন বিশ্বনাথ আওয়ামীলীগে এসব ব্যক্তিদের কোন গুরুত্ব নেই। ত্যাগী নেতাকর্মীরা তেলবাজীতে পছন্দ করেন না। তাদের কাছে দলের গুরুত্ব বেশি। দলে এখন কাউয়া হাইব্রিড এবং অনুপ্রবেশ কারীদের জয় জয়কার। ২০১৫ সালের ৮জুন উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে আওয়ামীলীগের সভাপতি মনোনীত করায় বিভক্তির সৃষ্টি হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটিতে প্রায় ১৫/১৬জন জামাত-বিএনপি ও রাজাকারপুত্র রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বার বার হাইব্রিডদের দল থেকে ঘাড় ধরে বের করার নির্দেশ দিলেও এখনও তারা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। আওয়ামীলীগের পদ নিয়ে গোপনে গোপনে অনেকেই জামাত-বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
পৌর কমিটি গঠন নিয়ে ১২জুন শনিবার সন্ধায় ৭টায় বিশ্বনাথ পুরান বাজার একটি মার্কেটে উপজেলা আ’লীগের এক সভা আহবান করা হয়েছে। এই সভায় পৌর কমিটি গঠন নিয়ে সমগ্র উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। নাম ও স্বাক্ষরবিহীন সভার পত্রও কেউ কেউ পেয়েছেন। আবার উপজেলা কমিটির অনেকেই, পৌর কমিটি গঠনের খবর জানেন না। পৌর কমিটির আহবায়ক,যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য সচিব হওয়ার জন্য অনেকেই খুব তৎপর রয়েছেন। তারা জেলা পর্যায়ের নেতাদের বাসায় বাসায় ঘুরছেন।
বিএনপির রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন সরাসরি জড়িত এক মহিলা পৌর কমিটির আহবায়ক হতে খুব বেশি আগ্রহী। তিনি বিএনপি নেতা নিখোঁজ ইলিয়াছ আলীর সময় সিলেট জেলা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৯১সাল থেকে ১৯৯৫সাল ও ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিশ্বনাথের বিএনপির দাপুটে নেত্রী ছিলেন। সে সময় তিনি উপজেলা প্রশাসনের অনেক সভায় জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন। ২০০৮সালের জাতীয় নির্বাচনের পর তিনি আওয়ামীলীগ হওয়া শুরু করেন। জেলা আওয়ামীলীগের এক নেতা তাকে খুব বেশি পছন্দ করেন। এজন্য তিনি তাকে পৌর কমিটির আহবায়ক করার জন্য মরিয়া হয়েছেন। বিশ্বনাথ আওয়ামীলীগের কিছু নেতাকর্মীদের নিয়ে তার বাসায় বৈঠকও হয়েছে। যারা নেতাদের তেল দিচ্ছেন, তাদের প্রচার প্রচারণা তুঙ্গে। আর যারা দলের জন্য ত্যাগ করেছেন তাদের কথা সবাই ভূলে গেছে। কারণ এখন জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে রাস্তায় থাকার কোন প্রয়োজন নেই। নেতারা চাচ্ছেন তাদের পছন্দসই ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো। আর দলের কর্মীরা চাচ্ছেন দলের জন্য যে নিবেদিত, তাকেই মূল্যায়ন করতে হবে। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের ৫/৬জন আহবায়ক প্রার্থী রয়েছেন। যারা সারা জীবন আওয়ামীলীগ করে সব খুয়েছেন তারা যদি এখন পৌর আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা কমিটিতে অর্šÍভুক্ত না হয়ে জামাত-বিএনপির লোকজন কমিটিতে প্রবেশ করে। তাহলে আওয়ামীলীগের নির্যাতিত ত্যাগী নেতাকর্মীরা কিভাবে মূল্যায়িত হবে। আওয়ামীলীগের অনেকের সাথে আলোচনা করে যে তথ্য পাওয়া গেছে। তাতে দেখা গেছে বিএনপির ঐ নেত্রীর প্রতি তাদের সমর্থন বেশি রয়েছে। শেষ মুহুর্তে দেখা যাক, শনিবারের বৈঠকে কমিটি গঠন করা হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেছেন, কোনমতেই বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা কমিটিতে অতীতের ন্যায় কোন অনুপ্রবেশকারীদের স্থান দেয়া হবে না।
বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ টেলিফোনে জানান, শনিবারের বৈঠকে আমরা কমিটি গঠন নিয়ে একটি সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হবে এবং পরবর্তীতে কমিটি গঠন করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক আহমদ বলেন, কমিটি গঠন নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের কোন অনুমতি নেয়া হয়নি।