নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার পিটাকরা গ্রামে মধ্যযুগীয় কায়দায় একের পর এক অমানবিক কর্মকান্ড ঘটছে। স্থানীয় প্রশাসনে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দায়ের করলেও অর্থের প্রভাবে দোষ পড়ে যায় অভিযোগকারীর উপর। ফলে অপরাধী চক্র এখন চরম বেপরোয়া। যে কোন সময় এই গ্রামে হত্যা কান্ডের মত ঘটনা ঘটতে পারে। জামাত বিএনপির একটি চক্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য করার পরও এ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় পিটাকরা গ্রামের মাওলানা ইলিয়াছ হুমাইদি ও তার ভাই আলকাছ আলীকে ঘর-বাড়ী ছাড়া করা হয়েছে। এমনকি পরিবারের মহিলা সদস্যদের উপর বর্বরোচিত ভাবে অমানুষিক অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে। বিষয়টি বিশ্বনাথ থানা পুলিশকে জানানো স্বত্ত্বেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং অভিযোগকারীদের নানা ভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। এই পরিবারের পক্ষে কলেজপড়ুয়া একটি মেয়ে ইমরানা বেগম সাংবাদিক সম্মেলন করেও কোন প্রতিকার পায়নি। তাদের একটাই দুর্বলতা, অর্থের সার্মথ্য নেই। প্রতিপক্ষের ১২/১৪জন যুক্তরাজ্য প্রবাসী হওয়ায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তাদেরকে উল্টো শ্বাসানো হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ মার্চ সকাল ১০টায় পিটাকরা গ্রামের আলকাছ আলীর বাড়ীতে ৮/১০জন লোক তাদের বাড়ী-ঘরে থাকা মহিলাদের উপর হামলা করে। তাদেরকে ধারালো লম্বা দা দিয়ে হত্যার জন্য আক্রমন করে। এতে তারা দৌড়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পায়। প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ঘরের দরজা জানালা ভেঙ্গে অপরাধমুলক ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ীঘর ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
এব্যাপারে আলকাছ আলীর স্ত্রী বেগম বিবি ১৫ মার্চ বিশ্বনাথ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে থানা পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায়। কিন্তু প্রতিপক্ষের লোকজন সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলে। ফলে এখনও অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকড করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে আলকাছ আলীর ছোট ভাই মাওলানা ইলিয়াছ হুমাইদির সাথে তাদের পূর্বপুরুষদের একটি মাজারের জায়গা জমি ও সরকারি রাস্তা জবরদখলের বিরোধ চলে আসছিল। এক পর্যায়ে গত বছর ২৬ শে মার্চ ইলিয়াছ হুমাইদি বাড়ীতে আসলে একই গ্রামের আখতার হোসেনের নেতৃত্বে জামাত বিএনপির লোকজন তাকে খুন করার জন্য আক্রমন করে মাথায় ছেদ মেরে গুরুত্বর জখম করে। সাথে সাথে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনার পূব্র্ েমাওলানা ইলিয়াছ হুমাইদি ও আলকাছ আলীর বিরুদ্ধে একটি চাদাবাজীর মামলা দায়ের করা হলে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার তদন্তে ঘটনাটি সাজানো ও মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় ফাইনাল রির্পোট দেয়া হয়। এ ধরনের অমানবিক ও রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে মাওলানা ইলিয়াছ হুমাইদি বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করা হলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান সাগরিকা ইসলামসহ একটি প্রতিনিধি দল গত ১২ ফেব্রুয়ারী সরেজমিনে পিটাকরা গ্রামে এসে তদন্ত করেন। ইতিমধ্যে ফাউন্ডেশনের তদন্ত রির্পোট প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। এমন রির্পোটে প্রতিপক্ষের ক্ষতি হতে পারে এই সংবাদে উত্তেজিত হয়ে এই গ্রামের জামাত বিএনপির লোকজন ইলিয়াছ হুমাইদি, তার ভাই আলকাছ হুমাইদি ও পরিবারের মহিলা সদস্যদের বাড়ী থেকে বের করে দেয়ার জন্য গত ১৪ মার্চ হামলা করে।
এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মূসা জানান, ১৪ মার্চের ঘটনাটির ব্যাপারে একটি জিডি করা হয়েছে। জিডির প্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।