স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৩নং অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল একটি হত্যা মামলার আসামী হয়েও বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি অলংকারী ইউনিয়নের মনোকুপা গ্রামের হাজী মখলিছ আলী হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। এলাকায় তিনি পলাতক থাকলেও বিশ্বনাথ-সিলেট শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল যোগে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়। তার বিরুদ্ধে আরেকটি জালিয়াতির মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন অপকর্মের হোতা নাজমুল ইসলাম রুহেলকে গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহীনির নিকট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, নাজমুল ইসলাম বিএনপির শাষনামলে রাষ্ট্রবিরোধী ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। পুলিশের এক কর্মকর্তার সাথে সু-সম্পর্ক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আওয়ামীলীগের কতিপয় চুনাপুটি তাকে রক্ষায় চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বেশ টাকাও লেনদেন হচ্ছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেলের বিরুদ্ধে এক ডর্জনেরও বেশি মামলা ছিল। মামলাগুলো হচ্ছে, বিশ্বনাথ থানার মামলা নং-১৬, তারিখ ২৪.০৬.২০২০ইং, ধারা ৩০২/ ৩২৬/ ৩২৫/ ৩২৪/ ৩২৩ দ: বি:, একই থানার মামলা নং-০৪, তারিখ ০২.০৮.২০১৯ইং, ধারা ৩৮৫/ ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ৫০৬/ (২) দ: বি:, মামলা নং-১৩ তারিখ ২২.০৪.২০১২ইং ধারা ১৪৭/ ১৪৮/ ১৪৯/ ৩৩২/ ৩৩৩/ ৩৫৩/ ৪২৭ দ: বি:, মামলা নং-১৫ তারিখ ২৩.০৪.২০১২ইং ধারা ৪ (১) ধারা ৫ আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ দ্রুত বিচার আইন ২০০২ (সংশোধনী ২০০৯), মামলা নং-১৬ তারিখ ২৩.০৪.২০১২ইং, ধারা ১৪৭/ ১৪৮/ ১৪৯/ ৩৩২/ ৩৩৩/ ৩৫৩/ ৩০৭/ ৩০২/ ৩৫৬/ ৩৭৯/ ৪২৭ দ: বি:, মামলা নং-১৭ তারিখ ২৫.০৪.২০১২ইং, ধারা ১৪৭/ ১৪৮/ ১৪৯/ ৪৪৭/ ৩৩২/ ৩৩৩/ ৩৫৩/ ৪৩৬/ ৪২৭ দ: বি: মামলা নং-১৭ তারিখ ২৪.১২.২০১৩ইং ধারা ১৬ (২) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন, মামলা নং-০১ তারিখ ০১.০৯.২০১৪ইং ধারা ১৪৩/ ৩৪১/ ৩২৩/ ৩২৫/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৩৭৯/ ১১৪ দ: বি:, মামলা নং-২২ তারিখ ৩১.১২.২০১১ ইং, ধারা ১৯ (১) এর ৭ (৪) ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইন মামলা নং-০৫ তারিখ ১৪.০১.২০০৯ইং, ধারা ১৪৩/ ১৮৫/ ১২০/ ৩৫৩/ ৩৭৯/ পেনাল কোড ১৮৬০ তৎসহ অনুচ্ছেদ (২বি) ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধনী) ২০০৮। বিভিন্ন সময়ে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ পুড়ানো, সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এই নাজমুল ইসলাম রুহেল।
স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। চেয়ারম্যানের ক্ষমতাবলে মানুষের বিচারের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গত রমজান মাসে পেছি খুরমা গ্রামের গ্রামবাসী ও র্যাব সদস্যের মধ্যে মারামারি হলে চেয়ারম্যান রুহেল এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। করোনাকালীন সময়ে সরকারের বরাদ্ধকৃত ত্রাণ সামগ্রীর তালিকা তৈরি ও বিতরণে চরম অনিয়ম ও দুর্ণীতি করছেন। কয়েক বছর পূর্বে তিনি গাঁজাসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শামিম মুসা জানান, চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছেনা। তথ্য পেলে অবশ্যই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মনিরুজ্জামান জানান, মনোকুপা হত্যাকান্ডের ঘটনার পর চেয়ারম্যান আন্ডারগ্রাউন্ডে ইউনিয়নের কাজকর্ম পরিচালনা করছেন। তবে কেন ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান আলতাব আলীকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে দায়িত্ব দেয়া হল এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুজ্জামান বলেন, কাগজপত্র আসলে আলতাব আলীকে দায়িত্ব দেয়া হবে।