স্টাফ রিপোটার : পূর্ব বিরুধের জের ধরে আমার ভাশুর সমছু মিয়া ও প্রতিপক্ষ নুরুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ সৃস্টি হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল মধ্যস্থতা করেন। এতে আমরা উভয় পক্ষ তার নিকট ২লাখ টাকা জামানত রাখি। কিন্তু জামানত নিয়ে রুহেল চেয়ারম্যান প্রতিপক্ষ নুরুল ইসলামের পক্ষ দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার নির্দেশে নুরুল ইসলাম পক্ষ সালিশ বৈঠক অমান্য করে আমাদের পক্ষের লোকজনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। আর পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী চেয়ারম্যান রুহেলের নির্দেশেই গত ২৩জুন আমার স্বামী মখলিছ মিয়াকে (৬৫) হত্যা করা হয়। এখানেই শেষ নয়, থানায় মামলা দেওয়ার পর মামলা তুলে নিতে আসামিরা নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আর প্রতিপক্ষের দেওয়া মামলায় আসামি না হয়েও পরিবারের শিশুসহ তাদের ১৪জনকে এখন পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (০২জুলাই) বিকেলে এভাবেই স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মনোকুপা গ্রামের নিহত মখলিছ মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫৫)।
নিহত মখলিছ মিয়ার ছোটভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলু মিয়ার স্ত্রী সেলিনা আক্তার (৩৬) বলেন, প্রতিপক্ষের আত্মীয় বড়তলা গ্রামের মানিক মিয়ার ভাই মাসুক মিয়া সিলেটের বরইকান্দি থেকে ভাড়াটে লোকজনকে নিয়ে রাতের বেলা তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, আমার ভাই আগামি সপ্তাহে দেশে ফিরলেই তোদেরকে মজা শিখাবো। তার অভিযোগ অলংকারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বড় তলা গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম রুহেলের নেতৃত্বে মারামারির ঘটনা ঘটেছে এবং তার ভাশুর নিহত হয়েছেন। এখন চেয়ারম্যানকে মামলার আসামি দেওয়ায় তার ইন্ধনে এসব হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (০২জুলাই) রাতে বরইকান্দির আত্মীয় পরিচয়ে মুখোঁশ পরা ৪/৫জন তাদের বাড়ি-ঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তাদের দাবি প্রতিপক্ষের মামলায় আসামি না হয়ে ভয়ে তাকেও সন্তানাদি নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
নিহতের জামাতা (ভাতিজির স্বামী) তেতলী গ্রামের বাসিন্দা সাদেক আহমদের অভিযোগ, আত্মীয়তার সুবাদে মারামারির আগেও তিনি তেলিখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বরইকান্দির বাসিন্ধা আলফু মিয়া, তেতলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম, বাসেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজমল আলী বিশ্বনাথের নাজমুল ইসলাম রুহেল চেয়ারম্যান, আলীগ নেতা কবির আহমদ কুব্বারকে নিয়ে সালিশে মিমাংশার চেষ্টা করেছেন। সালিশের জন্য উভয় পক্ষ চেয়ারম্যান রুহেলের নিকট ২লাখ টাকা জামানতও রেখেছেন। কিন্তু বৈঠকের দিন চেয়ারম্যান রুহেল উপস্থিত না হয়ে অন্যত্র প্রতিপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন এবং তার নির্দেশে প্রতিপক্ষের লোকজন সালিশ না মেনে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এক পর্যায়ে রুহেল চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তার চাচা শশুড়কে হত্যা করেন প্রতিপেক্ষর লোকজন। আসামি গ্রেপ্তারসহ ন্যায় বিচার পেতে তিনি পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতাও কামনা করেছেন।
মুঠোফোন বন্ধ থাকায় ইউপি চেয়ারম্যান নাজুমল ইসলাম রুহেলের সেঙ্গ যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা বলেন, আসামি না হয়েও পালিয়ে বেড়ানোর বিষয়টি তার জানা নেই। তবে, এ বিষয়টি তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। এছাড়াও মামলার আসামি না হলে পালিয়ে বেড়ানোর কোন প্রয়োজন নেই বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে গত ২৩জুন বিকেলে মনোকুপা মসজিদের মোতাওয়াল্লী হাজি মখলিস মিয়ার উপর নুরুল ইসলাম পক্ষের লোকজন হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় উভয়পক্ষে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন ওয়ারিছ আলীর (৬০), তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।