সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের মৃত্যুতে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের শোক

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম মৃত্যু বরণ করেছেন। নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জবেদুর রহমান, জাতীয় ৪ নেতা পাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক, দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল আহমদ মতছিন, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এ এইচ এম ফিরোজ আলী, আওয়ামীলীগ নেতা ও বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক, আব্দুল জলিল জালাল, ডা: শানুর আলী, মাষ্টার হানিফ আলী, আব্দুল হামিদ, লিয়াকত আলী, খাজাঞ্চি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শংকর চন্দ্র ধর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সিতার মিয়া সহ প্রমুখ।
শনিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। একইসঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র ছিলেন। আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ নাসিমের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে।
তার পিতা অন্যতম জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকারে অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মোহাম্মদ নাসিমের মায়ের নাম মোসাম্মৎ আমিনা খাতুন, যিনি আমেনা মনসুর হিসেবেই পরিচিত। তিনি একজন গৃহিণী ছিলেন। পারিবারিক জীবনে নাসিম বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক। তার স্ত্রীর নাম লায়লা আরজুমান্দ। মোহাম্মদ নাসিম জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৪-১৮ সরকারে নাসিম স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ১৪ দলীয় মহাজোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতির পাশাপাশি সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আছেন মোহাম্মদ নাসিম। ঢাকাসহ নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন।
ছাত্রজীবনের প্রথম দিকে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। পরে অল্প কিছু দিন ছাত্রলীগের রাজনীতিও করেন। ছাত্ররাজনীতি ছাড়ার পরে যুবলীগের রাজনীতি করলেও ১৯৮১ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন মোহাম্মদ নাসিম। ওই সম্মেলনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের যুব সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৭ সালের সম্মেলনে তিনি দলের প্রচার সম্পাদক মনোনীত হন। ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালের সম্মেলনে মোহাম্মদ নাসিমকে দলের একমাত্র সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ২০০২ ও ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত দলের সম্মেলনে তাকে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির এক নম্বর সদস্য পদে রাখা হয়। এরপর ২০১২ সালের সম্মেলনে তাকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এরপর টানা তিন মেয়াদে তিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন।
মোহাম্মদ নাসিম ভোটের রাজনীতিতে অত্যন্ত সফল। ১৯৮৬ সালে তিনি প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। সিরাজগঞ্জ-১ সংসদীয় আসন (কাজীপুর) থেকে পাঁচবার বিজয়ী হয়েছেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ১/১১ সরকারের দেওয়া মামলার কারণে অংশগ্রহণ করতে পারেননি নাসিম। ওই নির্বাচনে তার সন্তান তানভীর শাকিল জয়কে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে মোহাম্মদ নাসিমকে আবার মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। সে সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
রাজনৈতিক জীবনে রাজপথে সবসময়ই সক্রিয় ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। সরকারবিরোধী আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন সময় নির্যাতন সইতে হয়েছে তাকে। রোষানলের শিকার হয়েছিলেন ১/১১ সরকারেরও। সে সময় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে কাটান তিনি। পাশাপাশি এই সময়ে চরম অসুস্থ হয়ে পড়েন।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *