ডেক্স রিপোর্ট : সিলেটের বিশ্বনাথে চিকিৎসার নামে ঝাড়-ফুঁকের কথা বলে (১৯) বছর বয়সের এক তরুনীকে প্রায় দেড়বছর ধরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষক ভন্ড কবিরাজের নাম কমরুদ্দিন (৫০)। সে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে। বর্তমানে বিশ্বনাথ পুরান বাজার (শরীষপুর) এলাকার আছদ্দর ম্যানশনে ভাড়াটিয়া হিসেবে থেকে সিফা তদবিরালয় খুলে রমরমা কবিরাজি ব্যবসা চালিয়ে আসছিল কমরুদ্দিন। বৃহষ্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) রাতে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন ওই নির্যাতিতা তরুণীর মা উপজেলার নরসিংপুর গ্রামে বসবাসকারী নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ থানার বড়কুট গ্রামের দিনমজুর সাদেক মিয়ার স্ত্রী হালিমা বেগম। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতেই তালাবন্দী সিফা তদবিরালয় থেকে তরুণীকে উদ্ধার ও কবিরাজের স্ত্রী সুমি বেগমকে আটক করে থানা পুলিশ। মধ্যরাতে আটক করা হয় কবিরাজ কমরুদ্দিনকে। পরে তরুণীর মায়ের দায়ের করা অভিযোগ মামলা (নং-৪/০৭.০২.২০২০) হিসেবে রেকর্ড করে কবিরাজ ও তার স্ত্রীকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তরুণীর মা হালিমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, প্রায় দেড়বছর পূর্বে আমার বড় মেয়ে (ওই তরুণী) নানা রকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তাকে নিয়ে কবিরাজ কমরুদ্দিনের শরণাপন্ন হই। চিকিৎসার প্রয়োজনে আমার মেয়েকে তার কাছে রেখে যেতে এবং নগদ ১০হাজার টাকা দিতে বলে সে। আমি কথামত টাকা পরিশোধ করে মেয়েকে তার কাছে রেখে আসি। পরবর্তীতে মেয়েকে আনার জন্যে সিফা তদবিরালয়ে যাওয়ার পরই ঘটে বিপত্তি। সে মেয়েকে আমার কাছে ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। নানা হুমকি-ধামকী ও ভয়-ভীতি দেখায়। এভাবে প্রায় দেড়বছর ধরেই সিফা তদবিরালয়ে মধ্যে তালাবন্দী করে আটকে রাখে আমার মেয়েকে। আমি তার ভয়ে কাউকে কিছু বলার সাহস পাইনি।
পুলিশ সূত্র জানায়, উদ্ধারের পর তরুণী জানিয়েছে, কবিরাজ কমরুদ্দিন চিকিৎসার নামে তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তুলে। তাকে দিনরাত ঘরের ভেতর তালা দিয়ে আটকে রাখত। কোথাও বের হতে দিত না। স¤প্রতি কমরুদ্দিন ভূয়া বিয়ের কাগজ তৈরী করে তাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিল।
সিফা তদবিরালয়ের আশপাশে বসবাসকারি কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কমরুদ্দিনের সিফা তদবিরালয়ে মূলতঃ সুন্দরী তরুণী-যুবতীদের আনাগোনাই ছিল বেশি। এর আগে সে পলি নামে একটা মেয়েকেও এভাবে তার বাসায় আটকে রেখে দিয়েছিল।
মামলা দায়ের ও সস্ত্রীক কবিরাজ কমরুদ্দিনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করে থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) শামিম মূসা বলেন, শুক্রবার তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।