ডাক ডেক্স : বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারি ইউনিয়নের পিটাকরা গ্রামে একটি মাজার ও মাজারের ভূমির বিরোধের জের ধরে একজন মাদ্রাসা সুপার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিরীহ এই পরিবারটিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ একটি প্রভাবশালী মহল নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে। গত ২১ অক্টোবর পিটাকরা গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিব উরফে কটাই মিয়ার পুত্র আক্তার হোসেন একই গ্রামের ইলিয়াস আলী আল-হুমাইদি ও তার ভাই আলকাছ আলী সহ ৫ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং ৩৬২/১৯ইং)। বাদি তার এজাহারে উল্লেখ করেন, ১৭ অক্টোবর বিকাল ৫টায় ইলিয়াস হুমাইদি সহ আসামি গণ মাজার প্রঙ্গনে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা পরিশোধ না করলে বাদি পক্ষকে মৃত্যুর হুকুম দিয়ে উরুস করতে পারবেনা বলে জানিয়ে দেন।
বাদি আক্তার হোসেন ও ইলিয়াস হুমাইদি এ দু’পক্ষে মধ্যে মাজার ও মাজারের ভূমি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি অনলাইন পত্রিকাসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিছু দিন পূর্বে ইলিয়াস হুমাইদি তার ও তার পরিবারে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ তার জিডি গ্রহণ না করে অপমান জনক কতাবার্তা বলে তাড়িয়ে দেন। এ বিসয়টি তিনি সিলেটের পুলিশ সুপারকে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছিলেন। ইলিয়াস হুমাইদির অভিযোগ তার প্রতিপক্ষ পুলিশকে ম্যানেজ করে জিডি গ্রহনে বাঁধা প্রদান করেছেন। তিনি মৌলভীবাজারে একটি মাদরাসার সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসলে রাতের অন্ধকারে অজ্ঞাতনামা লোকজন তাকে অনুস্মরণ করে। এতে তিনি ও তার পরিবার খুব শংকিত ছিলেন। অবশেষে তিনি গত ২৯ অক্টোবর পূণরায় থানায় গিয়ে জিডি করতে চাইলে নানা অজুহাতে তাকে বিদায় করে দেয়া হয়। নিরুপায় ইলিয়াস হুমাইদি ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে তার অভিযোগ জানালে তৎক্ষনাত বিশ্বনাথ থানা পুলিশ তার জিডি গ্রহন করে (জিডি নং ১৬২৮, তারিখ ২৯,/১০/১৯ইং)। কিন্তু ওসি তার উপর চরমভাবে ক্ষীপ্ত হন বলে তিনি অভিয়োগ করেন। জিডিতে ইলিয়াস হুমাইদি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাজানো মামলা মোকদ্দমার কথা উল্লেখ করেছিলেন।
মাজারের বিরোধের বিষয়টি সাংবাদিক সহ এলাকার সকল মহলের জানা রয়েছে এবং বিশ্বনাথের ডাক ২৪ ডটকমে ২টি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। মাজার ও মাজারের ভূমির কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ইলিয়াস হুমাইদির পূর্বপূরুষের নামে বিরোধপূর্ণ ভূমি ও মাজার এসএ ও বিএসএ রেকর্ড ভূক্ত রয়েছে। প্রতিপক্ষ তাদের একটি দলিল মূলে জায়গার মালিকানা দাবি করছেন। চাঁদাবাজির মামলাটি আদালত থেকে বিশ্বনাথ থানায় আসার পর মামলা তদন্ত কিংবা রেকর্ড না হলেও আসামিদের গ্রেফতারের জন্য ইলিয়াস হুমাইদির বাড়িসহ আতœীয় স্বজনের বাড়িতে থানা পুলিশ কয়েকদফা অভিযান চালিয়েছে। অসহায় এ পরিবারটি এখন মামলার ভয়ে আতংঙ্কে দিনযাপন করছেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই রসুল বলেন, আজ সকালে অথবা গত রাতে মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। তবে আমি আসামি ধরতে যাইনি। যে গিয়েছে তাকে জিজ্ঞাসা করুন। একজন মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা দায়েরে সচেতন মহলে দারুণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বার বার যোগাযোগ করে অবশেষে আসামি ইলিয়াস হুমাইদিকে মামলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অসহায় কন্ঠে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপ্রধান থাকাবস্থায় এধরনের সাজানো মামলা দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে হয়রানি করা দু:খ জনক। আমি সকলের কাছে সত্য ও ন্যায় আশা করছি।