ডাক ডেক্স : সিলেটের বিশ্বনাথে ১৮ বছর বয়সি এক কিশোরিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১০দিন আটক রেখে ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় গত ২৭ অক্টোরব বিশ্বনাথের ডাক ২৪ ডটকমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদ প্রকাশের পর গতকাল (২৯অক্টোবর) রাতে কিশোরির পিতা উপজেলার বৈরাগীগাঁও গ্রামের সফিক মিয়াকে থানায় ডেকে এনে মামলা করতে চাপ দেয় পুলিশ। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় ধর্ষক হাবিবুর রহমান টিটুকে । অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা করায় টিটুর পিতা মনফর আলী ও বড় ভাই শানুর আলীসহ আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাতানা আসামী করা হয়েছে। (মামলা নং-২৩)। এদিকে, ভিকটিম তরুণীকে মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে প্রেরণ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বখাটে হাবিবুর রহমান টিটু লামাকাজী ইউনিয়নের কোনাউড়া নোয়াগাঁও গ্রামের মনোহর আলীর ছেলে।
জানা যায়, মামলার প্রধান অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান টিটুর বসতবাড়ির পার্শ্ববতি একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করত ওই কিশোরি। তার বাড়ি উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের নওধার বৈরাগীরগাঁও গ্রামের একটি হত-দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। প্রায় ৬ মাস পূর্বে তার সঙ্গে পরিচয় হয় হাবিবুর রহমান টিটুর। গত ১১ অক্টোবর দুপুরে ওই কিশোরিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় টিটু। এরপর ১০দিন টিটু তার নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তি একটি নির্জন ঘরে কিশোরিকে আটকে জোরপূর্বকভাবে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এদিকে নিখোঁজের ঘটনায় তরুণীর পিতা গত ১৮ অক্টোবর বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (ডায়েরী নং- ১০০০) করেন। এরপর ২০ অক্টোবর টিটুর বাড়িতে যান বিশ্বনাথ থানার এসআই নবী হোসেন। তখন ভিকটিম কিশোরি ও অভিযুক্ত টিটুকে থানায় নিয়ে আসার জন্য পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর ওই দিন বিকেলে পরিবারের সদস্যরা ভিকটিকে ও অভিযুক্ত টিটুকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয় মাতব্বররা থানা পুলিশের কাছ থেকে বিয়ে দেয়ার কথা বলে অভিযুক্তকে বাড়িতে নিয়ে যান। কিন্ত বাড়িতে যাওয়ার পর স্থানীয় নওধার পূর্বপাড়া গ্রামের মুরব্বি সোনা মিয়া, আহমদ আলী ও আলী হোসেন অভিযুক্ত টিটুর ভগ্নিপতি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের মর্তুজ আলী সহ মাতব্বরা ধর্ষক টিটুকে তার স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেন।
তরুণীর ইজ্জতের মূল্য হিসেবে তার অসহায় পরিবারকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদানের প্রস্তাব দেন। কিন্ত তাতে তরুণীর পরিবার অসম্মতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে টিটুর পরিবারের পক্ষ থেকে তরুণীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এবিষয়ে বিশ্বনাথ সহ সিলেটের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে প্রশাসনে। কিন্ত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছিলেন দালালরা। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিশ্বনাথ থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ নবী হোসেন বলেন, ভিকটিমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার আসামীদেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।