৭০ বছরের কঙ্কালসার হাতিকে নিয়ে চলছে সমালোচনা

Uncategorized
শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্কঃ ৭০ বছরের রুগ্ন, কঙ্কালসার এক হাতিকে দিয়ে জোর করে প্যারেড করানো হয়েছে। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট হলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারীদের ঐতিহ্যবাহী এসালা পেরাহারা মিছিলে মৃতপ্রায় এ হাতিকে দিয়ে প্যারেড করানো হয়।

ঘটনাটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন পশু অধিকারকর্মীরা। পশুদের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুর আচরণের জন্য শ্রীলঙ্কা প্রশাসনকে ধিক্কার জানাচ্ছেন পশুপ্রেমীরা।

তাদের মতে, এটা চরম অন্যায়, অত্যাচার আর পশু অধিকার লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছুই নয়।

অনুষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষকে এক হাত নিয়ে তারা বলেন, যে হাতি হাঁটার সক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছে, তার ওপর ঝকমকে, ভারী আবরণ চাপিয়ে কোন আক্কেলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মিছিলে হাঁটানো হলো!

জানা গেছে, শুক্রবার ওই প্যারেডে বেশ কিছুক্ষণ হাঁটার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে বৃদ্ধ হাতিটি।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন সমালোচনা আর ধিক্কারের পর প্রকৃত ঘটনা জানতে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা প্রশাসন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এ বিষয়ে দেশটির বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং পর্যটনমন্ত্রী জন অমরাতুঙ্গা জানিয়েছেন, ৭০ বছর বয়সী ওই হাতিটির নাম তিকরি। কার বা কাদের নির্দেশে হাতিটিকে প্যারেডে হাঁটানো হলো তা জানতে তদন্ত শুরু করেছি আমরা।

তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে, জানান পর্যটনমন্ত্রী। বুধবার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে হাতিটিকে হাঁটানো হবে না বলেও জানান তিনি।

এই ঘটনার পর শুধু তিকরিই নয়, বাকি বন্দী রুগ্ন হাতিদের সঙ্গে যেন এমন অমানবিক আচরণ না ঘটে সেদিকে বিশেষ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশটির হাতি বিশেষজ্ঞ জয়ন্ত জয়বর্ধন বলেন, ‘প্যারেড থেকে হাতিটিকে সরিয়ে নেয়ায় প্রশাসনের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তবে বৃদ্ধ হাতিটির যত্ন ও চিকিৎসার প্রয়োজন। সে অপুষ্টিতে ভুগছে। যে কোনো সময় মারা যেতে পারে তিকরি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভবত এর মালিকরা প্রশংসা পেতে তাকে মিছিলে হাঁটিয়েছেন। তবে অনুষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ কী করে তাদের অনুমতি দিল সেটা ভেবে অবাক লাগছে খুব।’

এদিকে সেভ এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা লেক চেলার্টের দাবি, অনুষ্ঠানের দর্শকদের অনেকেই বলেছেন, প্যারেডে ঠিক বোঝা যায়নি তিকরি কতটা কষ্ট পাচ্ছিল। জমকালে পোশাকে সারা শরীর ঢাকা ছিল বিধায় তিকরির কঙ্কালসার দেহ কারো চোখে পড়েনি এবং তার কান্না কেউ দেখতে পায়নি।

প্রসঙ্গত, প্রতি বছরই শ্রীলঙ্কায় টুথের মন্দির থেকে এসালা পেরাহারা মিছিলের আয়োজন করা হয়। বৌদ্ধধর্মের অন্যতম পবিত্র মিছিল ও ধর্মীয় রীতি এটি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *