অনলাইন ডেস্ক :: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক শুরু হয়। বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় বৈঠকটি শেষ হয়। পরে ওই হোটেলেই যৌথ সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে কথা বলেন খলিলুর রহমান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
লন্ডনের সেই বৈঠক নিয়ে শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। পোস্টে তিনি বলেছেন, বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি।
সারজিসের পোস্টটি পাঠকদের হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখি। জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের এমন সুসম্পর্কই কাম্য।
কিন্তু হতাশার বিষয়- বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি। এ সরকার শুধুমাত্র নির্বাচন দেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো রূপ নয় বরং একটি অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে, দেশের মানুষের অসংখ্য ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার কাছে দায়বদ্ধ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণা পত্র ও জুলাই সনদ, মৌলিক সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন নির্বাচনের পূর্বশর্ত।
জুলাই সনদের পূর্বে নির্বাচনের মাস আর তারিখ নিয়ে কথা বলা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়বদ্ধতা ভুলে যাওয়ার নামান্তর। সনদ রচনার পরেই নির্বাচন বিষয়ক আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত।
দেশের স্থানীয় পর্যায়ে ইতোমধ্যে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, প্রশাসনকে প্রভাবিত করা, পেশি শক্তির প্রদর্শনসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা দৃষ্টান্ত প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান হচ্ছে। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। যেটা নির্বাচনের অন্যতম আরেকটি পূর্বশর্ত।
নির্বাচনের মাস এপ্রিল কিংবা ফেব্রুয়ারি যেটাই হোক না কেন, তার চেয়ে মুখ্য বিষয় হচ্ছে নির্বাচনের পূর্বে জুলাই সনদ, দৃশ্যমান বিচার এবং মৌলিক সংস্কারগুলো হচ্ছে কিনা। অন্যথায় একটা গণঅভ্যুত্থান শুধুমাত্র ক্ষমতা পালাবদলের মাধ্যম হয়ে থাকবে। যে ঐতিহাসিক দায় এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কখনোই এড়াতে পারবে না।’