অনলাইন ডেস্ক :: মযদালেফা হতে মিনায় পৌঁছে প্রত্যেক হাজীকে এই দিন জামরা নামে অভিহিত তিনটি স্তম্ভের যে স্তম্ভটাকে জামরা আকাবা বলা হয় এর দিকে লক্ষ্য করে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়। এই উদ্দেশ্যে পূর্বেই প্রত্যেক হাজীকে মুযদালেফা হতে কঙ্কর সংগ্রহ করতে হয়। মিনা উপত্যকার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এই জামরাতে ভীষণ ভিড় হয় এবং ত্রস্ততার মধ্যে কঙ্কর নিক্ষেপ সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রথম কঙ্কর নিক্ষেপ করার পর তালবিয়া বলা বন্ধ হয়। শরীয়াতের বিধান অনুসারে এই জামরার প্রতি কঙ্কর নিক্ষেপ এই দিনের জন্যই নির্ধারিত। অপর জামরা দুটির প্রতি কঙ্কর নিক্ষেপ পরবর্তী দিবসে শুরু হয়। পরবর্তী ১১ ও ১২ তারিখে তিনটি জামরার প্রত্যেকটির প্রতি সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়।
এই কঙ্কর নিক্ষেপ প্রকৃত পক্ষে শয়তানের প্রতি কঙ্কর নিক্ষেপের প্রতীক রূপে করা হয়। কথিত আছে যে, শয়তান হযরত ঈসমাইলকে (আঃ) প্রতারণা করবার জন্য এখানে আবির্ভূত হয় এবং তিনি শয়তানকে উক্ত রূপে বিতাড়িত করেন। তারপর হজযাত্রীকে দশম তারিখেই অথবা ১১ বা ১২ তারিখে মক্কা ফিরে গিয়ে কাবা গৃহের ফরজ তাওয়াফ করতে হয়। এই তাওয়াফের নাম তাওয়াফে জিয়ারাত। এই তাওয়াফ সমাপ্ত হলেই হজ্জ কর্ম সম্পূর্ণ হয়ে যায়। এতদ ব্যতীত হজ্জ যাত্রীগণকে আরো কয়েকটি অনুষ্ঠান সম্পাদন করতে হয়। যথা, দশম তারিখে জামরা আকাবার প্রতি কঙ্কর নিক্ষেপের পরে নিজের তরফ হতে পশু কুরবানী করা হয়। মস্তক মুন্ডন করা বা চুল ছাঁটা। মিনাতে যেকোনো স্থানে কুরবানী করলেই তা সিদ্ধ হয়। এর জন্য বিশেষ কোনো স্থান শরীয়তে নির্দিষ্ট করা হয়নি। অবশ্য কুরবানীর গোশত হজযাত্রী নিজে বা তার বন্ধু বান্ধবও ভক্ষণ করেন এবং দরিদ্রদেরকেও দান করে থাকেন। তবে, হজ্জের সময় কুরবানী করতে অক্ষম হলে এর ক্ষতি পূরণ রোজা রাখা দ্বারা করা যেতে পারে। কুরবানী সম্পাদনের পর সচরাচর কেশ মুন্ডন করতে হয়। তবে মহিলা হজ্জ যাত্রীগণ মস্তক মুন্ডন করবেন না। সে স্থলে তাঁরা চুলের অগ্রভাগ সামান্য ছাঁটবেন। মস্তক মুন্ডন বা চুল ছাঁটা হয়ে গেলেই ইহরাম শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তখনো প্রাত্যহিক জীবনের যাবতীয় কাজকর্ম তাঁর জন্য অনুমোদন হয় না। কঙ্কর নিক্ষেপ, কুরবানী করা, কেশ মুন্ডন এই কাজগুলো করা সুন্নাত। এই কাজগুলোর মধ্যে আকাবার কঙ্কর নিক্ষেপ ও মস্তক মুন্ডন দশম তারিখে অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু কুরবানীর ১১ বা ১২ তারিখে করলেও বৈধ হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যথাযথভাবে হজ্জ আদায় করার তাওফিক এনায়েত করুন, আমীন। ওয়াল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।