আব্দুস সালাম : সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ানো লোকজন। এদের অধিকাংশের বয়স ৮০ উপরে। জনতা ব্যাংক সিলেটের বিশ্বনাথ শাখাটি আব্দুল গনী প্লাজার দ্বিতীয় তলায়। নিচ তলায় কলাপসিবল গেইট তালা দেয়া। ভেতরে দারোয়ান দাঁড়িয়ে আছেন। নিচে মার্কেটের গলিতে আকাবাঁকা হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত আমাদের বাপ দাদার বয়সি লোকজন। ৬ মাস পরপর ব্যাংকে আসেন ভাতা নেয়ার জন্য। প্রতি মাসে জনপ্রতি সরকার ৫০০ টাকা করে মোট ৬ মাসে ৩ হাজার টাকা পান তারা। ভাতায় নাম লেখাতে যেমন সীমাহীন কষ্ট, তার চেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে গ্রাম থেকে এসে দুই তিন ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভাতা উত্তোলন করা। সকলের দাবি, তাদেরকে নিজ নিজ একাউন্টে ভাতা জমা দিলে কষ্ট লাঘব হবে।
মঙ্গল ও বুধবার (৩১ জুলাই ও ১লা আগষ্ট) থানা সদরে এসেছিলেন বিশ্বনাথ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সবচেয়ে প্রবীণ মুরব্বি ও মহিলারা। তাদের দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট দেখে অনেকেই আক্ষেপ করেছেন। বিশ্বনাথের ডাক ২৪ ডটকম এর পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আপনারা যে ভাতা পান সেই ভাতার প্রচলন কে করেছে? সকলেই এক সুরে জানালেন ‘শেখ হাসিনা, আমাদের ভাতা দিয়েছেন, আমরা খুশি, তাঁকে যেন (শেখ হাসিনাকে) আল্লায় হায়াত দেন। তারা এও বলেন, আমরা জানছি বাজেটে শেখ হাসিনা আমরার জন্য বেশি টেকা বাড়াইছইন। তাই মাসে যদি আজার পনরশ কইরা দেইন তবে আমরার জান বাঁচব,।
লাইনে দাঁড়ানো সবচেয়ে প্রবীণ মুরব্বি ইদ্রিছ আলী। বয়স তার ১১৮ বছরের মত। বাড়ি তার লামাকাজি ইউনিয়নে দোকানি পাড়ায়। বয়বৃদ্ধ এই প্রবীনের লাইনে দাঁড়ানোর ক্ষমতা যেন হারিয়ে গেছে। কিছু সময় বসে থাকেন আবার কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি যেন শান্তিÍ পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় তাকে কিছু কথা জানার চেষ্টা করলে তিনি একবাক্যে বলেন আমরা শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করছি। এভাবে কথা হয় কাজিরগাঁও গ্রামের আমির আলী, বশিরপুর গ্রামের আতাউর রহমান, ভুরকি গ্রামের আব্দুর রুপ, মাধবপুর গ্রামের বশির আহমদ, ইসবপুর গ্রামের রিয়াজ আলী, উদয়পুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, হোসেনপুর গ্রামের আরশ আলী, নোয়াগাঁও গ্রামের কমরুন নেছা, আইলকারি গ্রামের আফরোজা বেগম, ভুরকি গ্রামের সিরাজুন নেছা, কাজির গাঁও গ্রামের ময়না বিবি, মাধবপুর গ্রামের রকিবুন নেছা সহ ভাতা প্রাপ্ত অনেক প্রবীণদের আমাদের কথা হয় তারা সকলেই নিজ একাউন্টে ভাতা প্রদান এবং ভাতার পরিমান বাঁড়ানোর জন্য শেখ হাসিনার কাছে দাবি করেছেন এবং সকলেই শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেছেন। এসব প্রবীণদের কষ্ট লাঘবে ভাতা প্রদানের সহজ কোন পথ আছে কিনা ভেবে দেখা উচিৎ।