ডাক ডেস্ক : দেশে গত ৬ বছরে (২০১৮ থেকে ২০২৩) রেললাইন থেকে ৫ হাজার ৫৮৭ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। যাদের বেশির ভাগের বয়স ১৯ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। আর নিহতদের মধ্যে ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে ২০১৮ সালে রেললাইনে মোট লাশ উদ্ধার করা হয় এক হাজার দুই জনের। এরপর ২০১৯ সালে ৯৮০ জনের, ২০২০ সালে ৭১৩ জনের, ২০২১ সালে ৭৭৮ জনের এবং ২০২২ সালে এক হাজার ৫০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
সবশেষ ২০২৩ সালে রেললাইন থেকে এক হাজার ৬৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সবমিলিয়ে এই ৬ বছরে রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধার হয়েছে ৫ হাজার ৫৮৭ জনের। সেই হিসেবে গড়ে রেললাইন থেকে মাসে ৭৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে চার হাজার ২৮৪ জন পুরুষ ও এক হাজার ৩০৩ জন নারী। পেশার দিক থেকে ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী, দুই হাজার ৬১২ জন শ্রমজীবী ও ৪৫০ জন চাকরিজীবীর লাশ উদ্ধার হয়েছে।
বাকি দুই হাজার ১৪৮ জনের পেশা সম্পর্কে জানা যায়নি। এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে ৪৫৩ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। ১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে তিন হাজার ৬৪৯ জন। পঞ্চাশের বেশি বয়স এক হাজার ৪৮৫ জনের।
এসব মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা গেছে, অনেকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনের নিচে পড়েছে, কেউ সেলফি তুলতে গিয়ে কেউ বা রেললাইনে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় বা অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের জন্য চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে তাড়াহুড়া করে রেললাইন পার হতে গিয়েও মারা গেছে অনেকে। এ ছাড়া রেললাইনে মৃত্যুর ঘটনার একটি বড় অংশের কারণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এসব মৃত্যুর কারণ দুর্ঘটনা নাকি হত্যা, তা স্পষ্ট না হওয়ায় অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শাহ আলম বলেন, যেসব স্থানে হাইওয়ে ও রেলপথ পাশাপাশি, এসব স্থানে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। যেমন—রেললাইনের পাশে বাস থামল আর প্রস্রাব করতে নামল এক যাত্রী। সে যদি রেললাইনের পাশে বা ওপরে দাঁড়িয়ে যায়, তাড়া থাকার কারণে বা অন্য কোনো শব্দে ট্রেন আসার বিষয়টি খেয়াল করতে পারে না।
এভাবে কিছু ঘটনা ঘটেছে। কাজেই রেললাইনের আশপাশে থাকলে কানের ওপর ভরসা না করে চোখের ওপর ভরসা করাই ভালো। আর এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, চাইলেই কেউ যাতে চট করে রেললাইনের ওপর চলে আসতে না পারে।