ডেস্ক রিপোর্ট : মঙ্গলবার দুপুরে ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয় বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ।
ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ এবং ২৩ নাবিকের মুক্তিপণ বাবদ ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছে জলদস্যুরা। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে এ তথ্য জানা গেছে। এখন জাহাজটির মালিকপক্ষ দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
জিম্মি নাবিক ও জাহাজ উদ্ধার করতে মালিকপক্ষ তৎপরতা শুরু করেছে বলে জানা গেলেও তারা কিন্তু মুক্তিপণের অর্থের পরিমাণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বলা হচ্ছে, জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। আলোচনা চলছে। এখনও সুরাহা হয়নি। তবে আশা করা যায়, জলদস্যুদের কবল থেকে নাবিকদের উদ্ধার করে আনা সম্ভব হবে।
জাহাজটির মালিকপক্ষ চট্টগ্রামের শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম। মঙ্গলবার বিকাল থেকে নাবিকদের স্বজনরা প্রতিষ্ঠানটির আগ্রাবাদ বারিকবিল্ডিং মোড়ের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বুধবার (১৩ মার্চ) সকালেও কান্না জড়িত স্বজনরা প্রতিষ্ঠানটির সামনে জড়ো হন। তারা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলাপ করছেন। একই সঙ্গে নাবিকদের যেকোনো মূল্যে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়েছে।
নাবিকদের স্বজনদের এমন দাবির মুখে কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেছেন, ‘জাহাজের মালিকপক্ষ নাবিকদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূভাবে শেষ করতে মালিকপক্ষ বদ্ধপরিকর।’
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এর আগেও গ্রুপটির জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। তখনও সফলভাবে আলোচনা শেষ করে মালিকপক্ষ নাবিকসহ জাহাজটি উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছিল। অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার আরও বেশি আন্তরিকতার সঙ্গে মালিকপক্ষ কাজ করছে।’
৫ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আলোচনা চলছে। মুক্তিপণ বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। চেষ্টা করা হচ্ছে দ্রুত নাবিকদের ফিরিয়ে আনার। এ মুহূর্তে জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে সর্বশেষ বার্তায় নাবিকেরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত নাবিকেরা ভালো আছেন বলে তথ্য রয়েছে।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীর কাছে হোয়াটসঅ্যাপে একটি সংক্ষিপ্ত অডিওবার্তা পাঠান।
আরও পড়ুন, অডিওবার্তায় আতিক উল্লাহ খান বলেছেন, ‘এই বার্তাটা সবাইকে পৌঁছে দিয়ো। আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেয়, আমাদের একজন একজন করে মেরে ফেলতে বলেছে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিয়ো।’
মঙ্গলবার দুপুরের পর জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় জলদস্যুরা। এই খবর বাংলাদেশে এসে পৌঁছার পর থেকে জাহাজ মালিক ও নাবিকদের উৎকণ্ঠায় সময় যাচ্ছে। মালিকপক্ষ চায় নাবিকসহ জাহাজটি অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। আর স্বজনরা দাবি করছেন, দ্রুতই যেন নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এ নিয়ে কেএসআরএম’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং কার্যালয় এখন থমথমে অবস্থায় রয়েছে।