হাম রুবেলা ইপিআই কার্যক্রম অনিদিষ্ট কালের জন্য বর্জন

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন তৃণমুলের স্বাস্থ্যকর্মী স্বাস্থ্য সহকারিদের সংগঠন, হেলথ এসিসটেন্ট এসোসিয়েশন তাদের দীর্ঘদিনের ৭দফা দাবি বাস্তবায়নে হাম-রুবেলা প্রশিক্ষণ ও ইপিআই কার্যক্রম অনিদিষ্ট কালের জন্য বর্জন ঘোষনা করেছেন। গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় হাম-রুবেলা কর্মসূচী বাস্তবায়নে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারি ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারিদের যৌথভাবে প্রশিক্ষণ দেয়ার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারিরা এ প্রশিক্ষণে যোগদান করছেন না। ফলে প্রশাসন হাম-রুবেলা কর্মসূচী বাস্তবায়নে শুধুমাত্র পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারিদের সংগঠন জানিয়েছে, তাঁদের দাবি বাস্তবায়নে বার বার আশ্বাস দেয়া হলেও দাবি বাস্তবায়ন করা হয়নি। কর্মচারিরা জানান,  আমরা কাজ করছি, অথচ আমাদের কাজের মূল্যায়ন করা হচ্ছেনা। শুধু বার বার আশ্বাসই দেয়া হচ্ছে। আমাদের পিট দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই তারা দাবি বাস্তবায়নে হাম-রুবেলা ও ইপিআই কর্মসূচী অনিদিষ্ট কালের জন্য বর্জন ঘোষনা করেছেন। স্বাস্থ্য সহকারিগণ তাঁদের ১১তম গ্রেড, টেকনিক্যাল পদ মর্যাদা, বেতন বৈষম্যসহ ৭দফা দাবি করে আসছেন। তাদের সাথে সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ আন্দোলনে সংযুক্ত রয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মত বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারিগণ বালাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে পূর্ব নির্ধারিত প্রশিক্ষণে যোগদান করেননি। প্রশিক্ষণ হলরুমের পাশে ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে সারা দিনব্যাপি শ্লোগান ও বক্তব্য প্রদান করেন। এই কর্মসূচীর কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে পালন করা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য সহকারিগণ জানিয়েছেন।

এসাসিয়েশনের সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন জানিয়েছেন, সিলেট জেলার কোন উপজেলায় প্রশিক্ষনে আমাদের কেউ অংশ গ্রহণ করেনি এবং করবেও না। আমাদের দাবি পূরনে বার বার আশ্বাস দেয়া হয়, কিন্তু দাবি পূরণ হয়না।

কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র জাকির হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা আমাদের ন্যার্য দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম এবং আমাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বস দেয়ায় কর্মসূচী প্রত্যাহার করি। কিন্তু এখনও কোন দাবি মানা হয়নি। তাই দাবি মানা না হওয়া পর্যন্ত হাম-রুবেলা ও ইপিআই কর্মসূচীতে আমরা যোগদান করবনা। এক প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন বলেন, আজকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের যে সকল উপজেলায় হাম-রুবেলা প্রশিক্ষণ হয়েছে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগঠনের কেউ এ পর্যন্ত প্রশিক্ষণে যোগদান করেনি। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের সু-দৃস্টি কামনা করছি।

এদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ কর্মচারিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ক্ষেভ বিরাজ করছে। তৃণমুলের কর্মচারিরা জানিয়েছেন, নিয়োগ বিধি বাস্তাবায়ন ১১তম ও১২তম ড্রেগ প্রদানসহ ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন ঘোষনায় কেন্দ্রীয় কমিটির অপেক্ষা করছেন তারা। উল্লেখ্য যে, আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ সপ্তাহ ব্যাপি হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উপজেলায় কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। চলতি বছর ১৮ র্মাচ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত হাম-রুবেলা (এমআর)ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করার কথাছিল। সে সময়ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারীরা এ কর্মসূচী বয়কট করেন এবং তাদের দাবী বাস্তবায়নের আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারনে হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ৫ডিসেম্বর থেকে ৬ সপ্তাহ ব্যাপী ৯ মাস থেকে ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাম-রুবেলা (এমআর) টিকা দেয়া হবে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত এই কর্মসূচী লাগাতার হওয়ার কথা। করোনা ভাইরাসের কারনে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মসূচী পালন করা যাবে না। ২০১৭ সাল থেকে দেশব্যাপী হাম রোগের প্রার্দভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং শিশুরা হাম রুবেলা রোগের মৃত্যুর ঝুঁকিরোধ করতে সরকার এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারীদের বয়কটের কারনে কর্মসূচী বাস্তবায়ন হবে কিনা এ নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ্নের সৃষ্টি হয়েছে।   


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *