নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে (ভারপ্রাপ্ত) বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলার রায় ঘোষনা করেছেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জনাকীর্ণ আদালতে মামলার আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষনা করা হয়। রায়ে মামলার প্রধান আসামি যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম তার ভাই সদরুল আলম, নজরুল আলম, সিরাজ উদ্দিন, জামাল মিয়া, শাহিন আহমদ, আব্দুল জলিল, আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদন্ড। ইলিয়াছ হোসেন, আব্দুন নুর, জয়নাল আবেদীন, আশিক উদ্দিন, আছকির আলী, ফরিদ আহমদ ও আকবর আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ৫০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছর করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন।
অপর ১৭ আসামী লুৎফুর রহমান, মামুনুর রশীদ, কাউসার রশিদ, দিলাফর আলী, পারভেজ মিয়া, ওয়াহিদ মিয়া, দিলওয়ার হোসেন, আজাদ মিয়া, মোক্তার আলী, আব্দুর রকিব, আঙ্গুর আলী, জাবেদ, ময়ুর, সফিক, মখলিস আলী, ফিরোজ আলী ও ফখর উদ্দিনকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামিরা কাঠগড়ায় নির্বাহ অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। আসামিদের জেল হাজতে নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল হাউমাউ করে কান্নকাটি শুরু করে এবং কয়েকজন লোকের বিরুদ্ধে খালাস পাওয়ার কথা বরে কোটি টাকা দাবি করেছিল বলে চিৎকার করতে থকে। আসামী মামুনুর রশীদ পলাতক রয়েছেন।
২০২১সালের ১লা মে সাইফুল ও তার বাহিনী চাউলধনী হাওরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চৈতনগর গ্রামের ইব্রাহিম আলী সিজিল গংদের রেকডিয় ভুমিতে জোর পূর্বক এক্সভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করে। এসময় বন্দুকের গুলিতে ১০শ্রেণীর ছাত্র সুমেল আহমদ শুকুরকে গুলি করে। হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু ঘটে। সুমেলের বাবা চাচাসহ ৩ গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে ২৭জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামালা (বিশ্বনাথ থানার মামলা নং-০৪, তারিখ ০৩/০৫/২১ইং, দায়ের করেন)। তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ওসি তদন্ত রমা প্রসাদ চক্রবর্তী দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩২জনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এ মামলার চার্জশীট আদালতে দালিখ করেন। মামলায় মোট ২৩জন স্বাক্ষী স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। বাদী ও আসামি পক্ষের আইনজীবিদের যুক্তিতর্ক শেষে বাদীপক্ষ আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। গতকাল ৩০জুলাই এ মামলার রায় ঘোষনা করেন আদালত। মামলার বাদী ও নিহত সুমেলের বাবা ও চাচা নজির উদ্দিন মামলার রায়ে এই প্রতিবেদকের নিকঠ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।