সিলেট-২ আসনে কোন চৌধুরীর কপালে নৌকা!

Uncategorized
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনটি একটি আলোচিত খ্যাতি অর্জন করেছে। এই আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন, সেই দলটি সরকার গঠন করে- এমন প্রমাণ ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। ঠিক তেমনিভাবে সিলেট-২ আসন (বিশ^নাথ-ওসমানীনগর) আসনটি আওয়ামীলীগের ঘাটি বলে সুখ্যাতি ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে দলের কর্মীর চেয়ে নেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় সেই ঐতিহ্য আর ধরে রাখতে পারছে না আওয়ামীলীগ। বিগত সংসদ নির্বাচনে হুজুগে ড. কামাল হোসেন যুক্তফ্রন্টের দেশের একমাত্র প্রার্থী সূর্য প্রতীকের মোকাব্বির খান বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর বিজয়ের সম্মান নির্বাচনী এলাকায় ধরে রাখতে পারেননি। রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতাকর্মী ও সাধারন ভোটারদের এখন আক্ষেপ ও আফসোসের কোন সীমা নেই। আওয়ামীলীগের এমপির প্রয়োজনীয়তা এখন সকলেই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। আগামী চ্যালেঞ্জিং সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের হাইকমান্ড সিলেট-২ আসনে একজন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খোজছেন। বিভিন্ন জরিপ ও জনমতে, বর্তমান এমপি মোকাব্বির খানের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। তাই আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামীলীগের যোগ্য প্রার্থী হলে, আসনটি পূর্ণরূদ্ধার করা সম্ভব বলে রাজনীতিকমহল মনে করছেন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর দলের নেতাকর্মীর চেয়ে জামাত বিএনপি ও জাতীয় পাটির নেতাকর্মীরা সবচেয়ে আনন্দিত হয়েছিলেন। শফিক চৌধুরীর হাত ধরে শুরু হয়, জামাত বিএনপি সকল স্তরের নেতাকর্মীর যোগদানের হিড়িক। গত প্রায় ১০ বছর বিশ^নাথে আর কোন দল নেই মনে হয়েছিল। ২০১৫সালে বিশ^নাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে বিএনপির সাধারন সম্পাদক এম ইলিয়াছ আলীর ডানহস্থ নামে পরিচিত পংকি খানকে দলের সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করা হলে বিষয়টি জেনে প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে কমিটি স্থগিত করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে পংকি খানকে সভাপতি রেখেই কমিটি অনুমোদন করা হয়। তারপর মহাজোটের প্রার্থী হয়ে জাতীয় পাটির ইয়াহিয়া চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হন। গত নির্বাচনে মোকাব্বির খান নির্বাচিত হলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা হতাশার সাগরে ভেসে ছিলেন। দলে কোন্দল, উপকোন্দল, গ্রুপ, উপ গ্রুপে এখন জজরিত।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট-২ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে চষে বেড়াচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি এখন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামীলীগের সম্ভ্যাব মেয়র প্রার্থী হয়ে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। শফিক চৌধুরী বলয়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, আনোয়ারুজ্জামান সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী হওয়ায় সিলেট-২ আসনে শফিক চৌধুরী মনোনয়ন পেতে আর কোন বাধা রইল না। গত ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই শফিক চৌধুরী সিলেট-২ আসনে নৌকাকে ভাড়া না দিতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। রাজনীতিক মহলে আলোচিত বিষয় হচ্ছে, জাতীয় পাটি আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচন করলে ইয়াহিয়া চৌধুরী মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, মোকাব্বির খান এমপি আওয়ামীলীগে যোগদান করে নৌকার প্রার্থী হওয়া অসম্ভব কিছু নয়!।
এদিকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নিদের্শে দেশের প্রখ্যাত শব্দসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরুপ রতন চৌধুরী বিশ^নাথ-ওসমানীনগরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভদ্র, নর্ম এবং ঐতিহ্যবাহি লামাকাজী ইউনিয়নের আকিলপুর গ্রামের ড. অরুপ রতন চৌধুরীর নাম এখন মানুষের মুখে মুখে। হাট-বাজার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন মহলে তাকে নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। বিভিন্ন সংস্থা ও দলীয় জরিপে ড. অরুপ রতন চৌধুরী এগিয়ে বলে একটি সূত্রে জানিয়েছে। ইতিমধ্যে ড. অরুপ রতন চৌধুরী বিশ^নাথ ও ওসমানীনগরে বেশ কয়েকটি সভা-সেমিনারে ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন। তার ঘনিষ্টজনরা বলছেন, দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তাকে নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। সবশেষে আওয়ামীলীগের দলীয়   প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী, ড. অরুপ রতন চৌধুরী না ইয়াহিয়া চৌধুরী প্রার্থী হবেন, এ বিষয়টি দেখার একমাত্র সুযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে।


শেয়ার করুন