সিলেট এমসি কলেজে গিরিশচন্দ্র রায়ের ম্যুরাল স্থাপন

সিলেট
শেয়ার করুন

ডাক ডেস্ক : সিলেট মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের প্রতিষ্ঠাতা রাজা গিরিশচন্দ্র রায়ের ম্যুরাল স্থাপনের করা হলো।  শনিবার বিকেলে এ ম্যুরালের উদ্বোধন করা হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠার ১৩১ বছর পর প্রতিষ্ঠাতার স্মৃতি রক্ষায় এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগ।

ম্যুরালটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক খাতে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ২১২ টাকা।

বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে ম্যুরালের উদ্বোধন করেন মুরারিচাঁদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ।

উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, গত ২২ জুলাই ম্যুরালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকাজের উদ্বোধন করা হয়। এর প্রায় চার মাস পর নির্মাণকাজ শেষে আজ ম্যুরালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। কলেজ প্রতিষ্ঠার ১৩১ বছর পর প্রতিষ্ঠাতার স্মৃতি রক্ষায় এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগ। ম্যুরাল নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাতার অবদান ও নাম শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুরারিচাঁদ কলেজের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ম্যুরাল নির্মাণ কাজের সমন্বয় কমিটির সদস্য প্রবীর রায় ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন ম্যুরাল নির্মাণ কমিটির সমন্বয়ক, কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ।

ম্যুরাল উদ্বোধনকালে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুরারিচাঁদ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ, সাবেক অধ্যক্ষ পান্না রানী রায়, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ, প্রফেসর পরিমল কুমার দে, প্রফেসর তপন কান্তি ধর, প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিশিষ্ট সাংবাদিক আল আজাদ, সাহেদ আহমদ, এ কে এম ফজলুর রহমান, বদরুল ইসলাম শোয়েব, মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, আক্কাছ খান ও বর্তমান শিক্ষার্থী আশরাফ ইসলাম।

এসময় মুরারিচাঁদ কলেজের শিক্ষকমন্ডলীসহ বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু করে পরে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা রাজা গিরিশচন্দ্র রায়ের ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয় এবং ম্যুরাল নির্মাণের অন্যতম উদ্যোগ গ্রহণকারী প্রয়াত মিশফাক আহমদ মিশুর স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তাগন বলেন, ঐতিহ্য সংরক্ষণের অংশ হিসেবে কলেজ প্রতিষ্ঠাতার ম্যুরাল স্থাপন একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এতে করে আগামী প্রজন্ম এই কলেজের ঐতিহ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে।

উদ্বোধন শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামীমা চৌধুরী। দলীয় নৃত্য এবং গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করা হয়।

এর আগে গত বছরের আগস্ট মাসে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রয়াত গুণী খান বাহাদুর সৈয়দ আবদুল মজিদ কাপ্তান মিয়ার ম্যুরাল স্থাপন করা হয়। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে ডিগ্রি কলেজে রূপান্তরের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা রাজা গিরিশচন্দ্রকে পাশ কাটিয়ে কাপ্তান মিয়ার ম্যুরাল স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়ায় নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়।

সিলেটে শিক্ষা বিস্তারে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন রাজা গিরিশচন্দ্র সেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৮৯২ সালে তিনি এমসি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। অন্যদিকে সৈয়দ আবদুল মজিদ কাপ্তান মিয়া আসামের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আইনজীবী ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। ১৯১৯ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সিলেটে আনার পেছনেও কাপ্তান মিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এর আগে ১৯১৬ সালে এমসি কলেজকে ডিগ্রি কলেজে রূপান্তরের পেছনেও তাঁর অবদান রয়েছে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *