সিলেটে ক্ষোভের অনলে পুড়ছে যুবদল

রাজনীতি সিলেট
শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্ক :: সিলেটে কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার দুই বছর পর কেন্দ্র থেকে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে কমিটি দুটি অনুমোদন হওয়ার পর থেকে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ক্ষোভের আগুনে পোড়া নেতাকর্মীরা পরদিন নগরীতে ঝাড়ু মিছিল করে কমিটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, কমিটিতে রাজপথের সক্রিয় ও ত্যাগীদের মূল্যায়ন হয়নি। বিপরীতে আন্দোলনে নিষ্ক্রিয়, সুযোগসন্ধানী, প্রবাসী ও অনুপ্রবেশকারীদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, এসব অভিযোগের সত্যতা নেই। কমিটিতে দলের পরীক্ষিতরাই ঠাঁই পেয়েছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ভোটে এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি ও মকসুদ আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আর মহানগরের সভাপতি শাহনেওয়াজ বক্ত তারেক ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মির্জা মো. সম্রাট হোসেন।

দুইবছর পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র থেকে জেলা যুবদলের ২৯১ ও মহানগর শাখার ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। ওই কমিটি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এর জের ধরে ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদমিনার থেকে ঝাড়ু মিছিল বের করেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। গত শুক্রবার বিকেলেও বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

গতকাল রবিবার সকাল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনারের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। তারা সদ্যঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান। বেলা ২টার দিকে দলের সিনিয়র নেতারা গিয়ে তাদের অনশন ভাঙান।

আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা তাদের পছন্দের লোক দিয়ে পকেট কমিটি করেছেন। দলে কোন অবদান নেই এমন অনেককে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হয়েছে। অথচ জেলখাটা ত্যাগী অনেক নেতাকর্মীকে কমিটিতে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এভাবে চললে রাজনীতিতে ত্যাগী নেতাকর্মীরা আগ্রহ হারাবেন। তাই তারা আন্দোলনে নেমেছেন।

আন্দোলনকারী নেতারা বলেন, ‘যারা বিগত দিন আন্দোলনে সক্রিয়  ছিলেন তাদেরকে কমিটিতে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। পরীক্ষিতিদের পরিবর্তে নিষ্ক্রিয় ও সুবিধাবাদীদের কমিটিতে অতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকেও যুবদলের কমিটিতে বড় পদ দেওয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এছাড়া কমিটিতে সিনিয়র-জুনিয়র বিবেচনা না করায় দলের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।’

তবে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মুমিন বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে যারা যেসব অভিযোগ করছেন তা সঠিক নয়। কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের যথাযথ মূল্যায়নের চেষ্টা করা হয়েছে। দুইজন প্রবাসী কমিটিতে অন্তভর্’ক্ত হওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে, তাদেরকে বাদ দেওয়া হতে পারে। আর স্বেচ্ছাসেবকলীগ থেকে যুবদলের কমিটিতে অনুপ্রবেশের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সত্য নয়।

যাকে নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে সে মহানগরীর ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ছিল। স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতেও ছিল সে। দীর্ঘদিন ধরে সে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। কে বা কারা ছবি এডিট করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তবে কমিটি নিয়ে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী ভুল বুঝছেন। আশাকরছি শিগগিরই এই ক্ষোভ প্রশমিত হবে।

সুত্র- সিলেটভিউ২৪ডটকম


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *