অনলাইন ডেস্ক :: লম্বা ক্রিকেট ক্যারিয়ারে চাপকে সঙ্গেই নিয়ে চলেছেন সাকিব আল হাসান। এরপরও গত দুই মাসের পরিস্থিতি কিছুটা আলাদাই ছিল। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এক পোশাককর্মী হত্যা মামলার খড়্গ নিয়ে খেলতে হচ্ছে তাঁকে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তো সাকিব এখনো দেশেই আসেননি। কানপুরে সংবাদ সম্মেলনে সাকিবও জানিয়েছেন, দেশের পরিস্থিতি বদলে গেছে। তবে চাপের মধ্যে এত দিন তাঁর মনোযোগ মাঠেই রেখেছেন সাকিব।
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষনা দেওয়ার সংবাদ সম্মেলনে আজ সাকিব বলেছেন, ‘পুরোপুরি ভিন্ন চিত্র। দেশে অনেক কিছু বদলে গেছে, যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না।
একজন ক্রিকেটার হিসেবে, যেটা নিজেদের হাতে ছিল, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যে সে কাজটা ঠিকভাবে করে গেছেন বা যাচ্ছেন, সাকিব বললেন তা–ও, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে কেমন খেলছি, কেমন প্রস্তুতি নিচ্ছি, পাকিস্তানে কেমন খেলছি। ভাগ্য ভালো ছিল, ভালো ফল করেছি, যেমন ফলাফল চেয়েছি।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন হয়েছে, খারাপ সময়ে কীভাবে নিজের মনোযোগ ধরে রাখেন। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘কঠিন, খুবই কঠিন। আমি কীভাবে (ফোকাস) রাখছি, এটা আল্লাহই জানেন। আমিও জানি না আসলে (হাসি)। যেটা বললেন যে একটা মামলা হয়েছে, আসলে সবারই অধিকার আছে। কিন্তু আপনারা সবাই জানেন, এটা কেমন ধরনের মামলা ছিল কিংবা আমি ওই সময় কোথায় ছিলাম। আমার কাজ কী ছিল কিংবা আমি কী করছিলাম। সুতরাং এ বিষয়টা নিয়ে খুব বেশি বলতে চাই না।
এর মধ্যে গত পরশু সাকিবকে শেয়ার কারসাজির জন্য ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সাকিবকে উত্তর দিতে হলো এ নিয়েও, ‘আমার জীবনে আমি আসলে নিজে থেকে কখনো ট্রেড করিনি, কেউ যদি এটা বলে—এ ট্রেডিং নিয়ে কথাও বলেছি, প্রমাণ দিলে আমি খুশি হব। এসব আসলে এখন যে কেউ যে কারোর মতো করতে পারে। এ জিনিসগুলো যদি সুন্দর করে বলত, আমার জন্য মানসিকভাবে ভালো হতো। কারণ, মিথ্যা অভিযোগগুলো আমার মনে হয় না ভালো কিছু করে দেশের জন্য বাইরের মানুষের কাছে। আমি যেহেতু ট্রেডই করিনি নিজ থেকে, স্বাভাবিকভাবে আমার ভুল করার বা ওটার সঙ্গে যে শব্দগুলো যোগ করা হয়েছে, সেটাও আমার জন্য দুঃখজনক।’
দেশের মাটিতে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছা নিয়ে সাকিব বলেছেন, ‘যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে গিয়ে খেলতে পারি, মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে এবং সে কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তাঁরা এ বিষয়টা জানে। তারা চেষ্টা করছে যে এটাকে কীভাবে সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায়। যাতে করে আমি গিয়ে খেলতে পারি, নিরাপদ অনুভব করি এবং একই সঙ্গে যখন আমার দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে বের হতে যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়। এটা বোর্ড খেয়াল করছে এবং এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষ যারা আছে, তারাও এ বিষয়টা দেখবে এবং দেখছে বলে আমি মনে করি। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে। যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে ভালো ভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।