নিজস্ব প্রতিবেদক : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র যুগ্মসচিব ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক মো: কুতুব উদ্দিন বলেছেন, সততা নিষ্ঠা এবং আন্তরিকভাবে কাজ করলে সফলতা লাভ করা যায়-এটা একটি চিন্তন নিয়ম। সিলেটের মাটি ও মানুষের টানে এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন মাতৃমৃত্যু শিশুমৃত্যু রোধে পিছিয়ে থাকা সিলেট বিভাগকে অন্যতম বিভাগে রুপান্তরিত করার মনোভাব নিয়ে তিনি প্রশাসন থেকে ফিরে পরিচালকের দায়িত্বভার গ্রহণ করি। সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জের সহকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সিলেট বিভাগের কাজের সফলতা অর্জন করেছে। আমি তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ের চেয়ে সিলেটের টিএফআর এখন ২.৩ অবস্থান করছে। কুতুব উদ্দিন বলেন, কর্মকর্তা কর্মচারিরা ভয়ের মধ্যে থেকে কাজ করলে কোন সফলতা আসেনা। আমি তাদের নির্ভয়ে কাজ করতে প্রেরনা দেয়ায় আজ সিলেটে সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
গতকাল (২০ সেপ্টেম্বর) বুধবার সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উদ্যোগে তাঁর অবসর জনিত বিদায় সম্বধনানুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে বুতুব উদ্দিন উপরোক্ত বক্তব্য প্রদান করেন। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সিলেট জেলার নবগত উপ পরিচালক বাবু বিপ্লব বড়–য়ার সভাপতিত্বে সভার শুরুতে পরিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন, সিলেট কালেক্টর মসজিদের ইমাম কারি মাওলানা শাহ আলম। গীতা পাঠ করেন, ডা. ফাল্গুনী দত্ত। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট বিভাগের সাবেক বিভাগীয় সহকারি পরিচালক ও মৌলভীবাজার জেলার সাবেক উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান, হবিগঞ্জ জেলার উপ-পরিচালক সাজিদুর রহমান, ব্রাম্মনবাড়িয়া জেলার উপ পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক।
প্রাণবন্ত ও বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডা. তোফাজ্জল হোসেন, ডা. হামিদা বেগম, ডা. মো. সাদিক মিয়া, ডা. মোশররফ হোসেন, ডা. রুহুল আমিন, ডা. মঈন উদ্দিন, ডা. এম এ মান্নান, ডা. অমল গোল আজাদ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ডা. জাহিদ হোসেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেনি লস্কর, শান্তিময় ভট্টাচার্য, জাকিরুল ইসলাম, মিশাল চন্দ্র পাল, জ্যোতিষ চন্দ্র পাল, মহিতুষ মজুমদার, মোহন লাল দাস, রেণু পুরকায়েস্ত, শাহ নেয়াজ ইয়াসমিন, আব্দুল আউয়াল, আব্দুর রহমান, সফিকুর রহমান, উচিৎ কুমার সিনহা, চৌধুরী রাজিব মোস্তফা, তপন কুমান ঘোষ, মীর সাজিদুর রহমান, নিকোলাস নয়ন, সেলিনা লস্কর, চায়না তালুকদার, সিফা বেগম, জাহাঙ্গির আলম, বাসির উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, চিত্তরঞ্জন সাহা, জসিম উদ্দিন, নুরুজ্জামান, হামিদা বেগম, সিবেন দাস, মানপত্র পাঠ করেন, সুপ্তা রানী পাল, কবিতা পাঠ করেন, আছমা হোসেন লুবনা।
সভায় পিনপথন নিরবতার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘন্টা সময় ধরে আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বক্তারা পরিচালক কুতুব উদ্দিনের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন ঘটনায় সৃতিচারণ করে তাঁকে সৎ কর্মনিষ্ট সাহসী বিচক্ষণ এবং একজন সরল মনের মানুষ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাঁকে রন্তগর্ভা মায়ের সন্তান উপাধিতে ভুষিত করেন। সভায় বিদায়ী অথিতি কুতুব উদ্দিনরে জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে একটি প্রমান্যচিত্র দেখানো হয়।
বক্তরা বলেন, ছাত্র জীবনে কুতুব উদ্দিন ছিলেন একজন মেধাবী। তিনি এসএসসি ও এইচএসসিতে শিক্ষা বোর্ডে মেধা তালিকায় কৃতিত্ব অর্জন করে চাকুরী জীবনে সহকারি কমশিনার ভুমি, ইউএনও, মেজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসক, সচিব মর্যাদার বিভিন্ন পদে চাকুরী করেন।
অনুষ্ঠানে কুতুব উদ্দিনের সহধর্মীনি ফাতেমা জুহরা জুবলীন, ছেলে হাসান সারওয়ার জামি, মেয়ে সুমাইয়া সারমিন জেনিফাসহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন।
তিনি সকল লোভ লালসা ও দুর্নীতির উর্ধে থেকে প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা হয়েও তাঁর নিজ মাতৃভুমি সিলেটে ২০০৯ সালে যোগদান করে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে সিলেটকে একটি মডেল বিভাগে রুপান্তরিত করে জিবনের সাফল্যতা দেখিয়েছেন। যে কারনে সিলেট বিভাগের ৪টি জেলায় তাঁকে নজির বিহীন ও বিস্ময়কর সংবর্ধনা প্রদান করেন। বক্তারা তাঁর পিতা মাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সিলেটের কর্মকর্তা কর্মচারিরা তাঁকে হৃদয় মন উজার করে এক অভুতপূর্ব লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রদান করেন। কোন সরকারি কর্মকর্তার এ ধরনের সংবর্ধনা হয়তো এটাই প্রথম। সংবর্ধনা শেষে এক সাংস্কৃতির আয়োজন করা হয়।
সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন, সিলেট বিভাগীয় সহকারি পরিচালক আবুল মুনসুর আসজাদ ও প্রদীপ কুমার দাস।