রোহিঙ্গাদের ফেরত না যেতে উসকানি দেয়া হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Uncategorized
শেয়ার করুন

জাতীয় ডেস্ক::  রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত না যেতে বিভিন্ন মহল থেকে উসকানি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

তিনি বলেছেন, ‘৯০-৯২ সালে ২ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল। এর বেশিরভাগই চলে গেছে। কিন্তু এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প করার কারণে অনেক সংস্থা কাজ করছে। রোহিঙ্গারা বছরের পর বছর এখানে থাকলে তাদের চাকরি বহাল থাকবে। এর মধ্যে স্বার্থান্বেষী গ্রুপও কাজ করছে। আরেকটি গ্রুপ আছে, যারা রোহিঙ্গাদের বেশিদিন রেখে বাংলাদেশে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করতে চায়। এরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।

রোববার একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট: চ্যালেঞ্জ এবং টেকসই সমাধান’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ, জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি সখো ইশিকাওয়া, ইউএনএইচসিআরের সহকারী আঞ্চলিক প্রতিনিধি এলিস্টার বোল্টন।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার জন্য ভাসানচরে যেতে বলা হয়েছিল। সেখানে তারা মাছ ধরা, হঁাস-মুরগি ও গরু-পালন করতে পারত। কিন্তু তারা সেখানে যেতে রাজি নয়। এখন সরকার তিনবেলা খাওয়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা কমে আসছে। পরবর্তীকালে কী হবে সেটা বলা মুশকিল।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের বোঝা উচিত নিজের দেশে না গেলে দাবি আদায় করা সম্ভব না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের উৎসাহ দিচ্ছে, মিয়ানমারে ফেরত না যাওয়ার। এখন তারা ফেরত না যাওয়ার জন্য বায়না ধরছে। এ ব্যাপারে সব পক্ষ বসে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

প্রিয়া সাহার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (প্রিয়া সাহা) যদি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে থাকেন, তাহলে সে জন্যই ওইসব কথা সেখানে বলেছেন। এস কে সিনহার বিষয়ে তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখভাল করছে, তারাই ভালো বলতে পারবে।

এর আগে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আবদুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থান দেয়া না হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি মানুষ গণহত্যার শিকার হতেন। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে বাহবা পাওয়া গেলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দিয়ে ও সম্মানজনকভাবে ফিরিয়ে দিতে বাংলাদেশ কাজ করছে। বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না। মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই তাদের ফিরিয়ে দেয়া হবে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন এ কাজে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।

মিয়া সেপ্পোর পক্ষে সোকো ইশিকাওয়া বলেন, মিয়ানমারের হাতেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকারকে যে সহায়তা করছে, সেটা অব্যাহত রাখবে।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ২০টি দেশ থেকে মোট ১৭৫টি একাডেমিক পেপার উপস্থাপন করা হয়। শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বিরোধ নিষ্পত্তি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, বাধ্যতামূলক নির্বাসন ও মানবাধিকার, অর্থনৈতিক প্রভাব, শারীরিক ও মানসিক সমস্যাসহ মোট ১১টি প্রতিপাদ্য বিষয়ে একাডেমিক পেপারগুলো উপস্থাপন করা হয়। সুত্র ড্রিম সিলেট


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *