রপ্তানি করা ভারতীয় ৫২৭ খাদ্যপণ্যে ক্যান্সারের উপাদান!

অপরাধ আন্তর্জাতিক জাতীয় সারাদেশ
শেয়ার করুন

অনলাইন ডেস্ক : ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথরিটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তারা ভারত থেকে রপ্তানি করা ৫২৭ খাদ্যপণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের উপস্থিতি চিহ্নিত করেছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ইউরোপে রপ্তানি করা ভারতীয় এসব পণ্যের ৮৭টি চালান ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে আটকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাকিপণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারত থেকে রপ্তানি করা অন্তত ৫২৭টি খাদ্যপণ্যে ক্যান্সারের উপাদান পেয়েছে তারা। এর মধ্যে বেশিরভাগই বাদাম, তিল, ভেষজ পদার্থ, মশলা, ডায়েট-ফুড জাতীয় খাদ্যবস্তু।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এসব খাদ্যপণ্যে ইথিলিন অক্সাইড নামক এক ধরনের বর্ণহীন গ্যাস কীটনাশক ও জীবাণুমুক্ত করার রাসায়নিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। রাসায়নিকটি সাধারণত চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু খাদ্যদ্রব্যে এই রাসায়নিক কোনভাবে মিশে শরীরে ঢুকলে লিম্ফোমা এবং লিউকেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি। ইউউ প্রতি কেজিতে ইথিলিন অক্সাইডের জন্য দশমিক ১ মিলিগ্রাম মাত্রা নির্ধারণ করে দিলেও ভারতীয় পণ্যগুলোতে এর পরিমাণ ১ মিলিগ্রামের বেশি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘র‍্যাপিড অ্যালার্ট সিস্টেম ফর ফুড অ্যান্ড ফিডের অনুযায়ী, ৫২৫টি খাদ্যদ্রব্য ও দুটি ফিড পণ্যে রাসায়নিকটি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩৩২টি পণ্যে সরাসরি ভারতে উৎপাদিত। আর বাকি খাদ্যপণ্য অন্যান্য দেশ থেকে গেলেও সেগুলোতে ভারতের নাম জড়িত।

একটি খাদ্যদ্রব্য পরীক্ষাকারী ল্যাবের প্রধান জুবিন জর্জ জোসেফ জানিয়েছেন, ইথিলিন অক্সাইড ছাড়াও আরও দু’টি রাসায়নিকের উপস্থিতি মিলেছে। তিনি বলেন, এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ইথিলিন গ্লাইকল। আফ্রিকায় কাশির সিরাপের মধ্যে এই রাসায়নিকটি পাওয়া গিয়েছিল। সিরাপ খেয়ে বহু শিশুর মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়।

ভারতের এক সমাজকর্মী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যে সব খাদ্যদ্রব্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়, সেগুলো সবচেয়ে ভালো মানের। সেগুলোর যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে স্থানীয় বাজারে যা বিক্রি হয়, তার কী অবস্থা কে জানে। সেগুলোও পরীক্ষা করা দরকার।

এরআগে, গত ২৩ এপ্রিল রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্ট স্পাইসেসের গুঁড়া মসলা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হংকং এবং সিঙ্গাপুর। হংকংয়ে ভারতীয় দুই কোম্পানির গুঁড়া মশলায় ক্যান্সার-সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ইথিলিন অক্সাইডের উপস্থিতি পাওয়ার পর ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, চলতি মাসে হংকং মাছ রান্নায় ব্যবহৃত ভারতীয় কোম্পানি এমডিএইচের তিন ধরনের গুঁড়া মশলা ও এভারেস্টের একটি গুঁড়া মশলার বিক্রি স্থগিত করেছে। সিঙ্গাপুরও দেশটির বাজার থেকে এভারেস্টের গুঁড়া মশলা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে রান্নার কাজে এসব মশলা ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে। এই ঘটনার পর ভারতীয় খাদ্য কর্তৃপক্ষ গত সোমবার এমডিএইচ এবং এভারেস্টের গুঁড়া মশলার মান পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।

সুত্র চ্যানেল আই


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *