নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ভৌগলিক অবস্থানগত কারনে প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। দক্ষিণ এশিয়ার নিচু ভুমির এ দেশটি দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং উত্তরে হিমালয় পর্বত দন্ডয়মান রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে তাপমাত্রা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়ে বায়ু চরম উষ্ণ হয়ে পড়েছে। সুর্যের তাপে সমুদ্রের পানি গরম হয়ে উত্তর দিকে এবং হিমায়লের বরফ গলা ঠান্ডা পানি দক্ষিণ দিকে এসে আকাশে বিষাক্ত কালো মেঘের সাথে ঘর্ষনের ফলে বজ্রপাতের সৃষ্টি হয়। গত ২৩ ও ২৭এপ্রিল সিলেটে বজ্রপাতে ২১জন প্রাণ হারান। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৫উপজেলার ৯জন। কানাইঘাটে ১জন মসজিদের ইমাম এবং বিশ^নাথে দুই শিশুর প্রাণ হারায়।
আন্তর্জাতিক গবেষনায় বিশ্বে প্রথম বজ্রপাতের দুর্যোগপূর্ণ এলাকা সুনামগঞ্জকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক সময় বজ্রপাত তাল, নারিকেল, সুপারি ও বট গাছের উপর পড়ে মানুষের জীবন রক্ষা হয়েছিল। কিন্তু এসব গাছ ও বন জঙ্গল উজাড় হওয়ায় সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে বজ্রপাত হয় বেশি। সুনামগঞ্জে বজ্রপাত নিরোধ স্থাপন করা হলেও গণসচেতনতার অভাবে মানুষের মুত্যু হচ্ছে। এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাত হয়ে থাকে। অনেক সময় মেঘ ছাড়াই বজ্রপাত হয়। বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি কৃষক, নারী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা নিহত হচ্ছেন।
বজ্রপাতের সময় কেউ হাওরে থাকলে শুকনো জায়গায় নিচু হয়ে পায়ের দুই আঙ্গুলের উপর ভর করে কানে হাতের আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিয়ে নুয়ে থাকতে হয়। বজ্রপাতের সময় গাছ ইলেক্ট্রিক খুটি, মোবাইলের টাওয়ারের নিচে থাকা যাবেনা। আকাশে কালো মেঘ এবং বজ্রপাতের ঘুড় ঘুড় শব্দ শুনলে ঘর থেকে বের না হওয়া উত্তম। বজ্রপাতের সময় পাকা দালান ঘরে আশ্রয় নেয়া উচিৎ। গাড়িতে থাকলে দরজা জানালা বন্ধ করে কিছু সময় থাকতে হবে। বাসা বাড়ির ফ্যান, ফ্রিজ, ল্যাপটব ও কম্পিউটারের ফ্লাগ খুলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখতে হবে। বজ্রপাতের সময় শিশুরা মাঠে খেলা করতে পারবেনা। বিদ্যুৎ চমকানুর সময় কোন মতেই হাতে থাকা মোবাইল চালানো যাবেনা। বজ্রপাত সবোচ্ছ ৩০/৩৫মিনিট সময় আকাশে ঘুড় ঘুড় শব্দ করে। এই সময় টুকুতে কোন ধাতব হাতে বা শরীরে রাখা যাবেনা। সর্ববস্থায় বজ্রপাতের সময় কঠোর সাবধানে থাকতে হবে।