সিলেটের বিশ্বনাথে কলেজে পড়ুয়া কিশোরিকে জোর করে বিয়ে দেওযায় ৩৮ দিনের মাথায় প্রবাসী বাবা ও স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক কিশোরী। তিনি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মাঝগাঁও গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসীর মেয়ে ও সিলেটের একটি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
মামলার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) কিশোরীর স্বামী বদরুল আলমকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া বদরুলও মাঝগাঁওয়ের বাসিন্দা মুক্তার আলীর ছেলে। অন্যদিকে কিশোরী তার স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে জোরকরে বাল্য বিয়ে ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে পিতা আব্দুল ওয়াজির বাবুল (৫০) ও স্বামী বদরুল আলমসহ (২৯) ৪ জনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন কিশোরী (মামলা নং ২৭)। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কিজিরপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে রাজিব আহমদ (৩০) ও সিলেটের হাওয়া পাড়ার বাসিন্দা মৃত করিম উল্লাহর ছেলে দিলোয়ার হোসেন (৪৪)।
জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর আগে ছাতকের পাইগাঁওয়ের বাসিন্দা সেই কিশোরীর মা (৩৮) দ্বিতীয় বিয়ে করেন প্রবাসী বাবুলকে। এরপর কিশোরীটির জন্ম হয় সেখানে। সে ৬ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তার বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে কিশোরীটি তার নানা বাড়িতে থেকেই লেখা পড়া করছে। গত ৩১ অক্টোবর লন্ডন থেকে দেশে ফিরে কলেজে পড়ুয়া মেয়েকে সিলেটের হাওয়া পাড়াস্থ নিজ বাসা আর্কহোম টাওয়ারে নিয়ে যান তার পিতা। সেখানে ১১দিন আটকে রেখে গত ১০ নভেম্বর তাকে বদরুল আলমের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিয়ে ফের তিনি লন্ডনে চলে যান তিনি। বিয়ের ৩৮ দিনের মাথায় কিশোরীটিকে উদ্ধার করে তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে হাজতে পাঠায় পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসাই মিজানুর রহমান বলেন, কিশোরী মেয়ের প্রধান অভিযুক্ত বাবা লন্ডনে থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলার ২য় আসামি তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে।