বিশ্বনাথ চৈতননগরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারঃ ওসি’র নির্দেশে খুনি সাইফুল পালিয়ে যায়

Uncategorized
শেয়ার করুন

স্টাফ রির্পোটার: সিলেট গোলাপগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী বলেছেন, দয়াল ও সুমেল হত্যাকারী যতই শক্তিশালী হয়না কেন, তাদেরকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। চাউলধনী হাওর নিয়ে সংগঠিত ডাবল মার্ডারের সাথে জড়িত খুনিদেরকে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ কোন সহযোগিতা করেছে কিনা এবং তাদের দায়িত্ব কর্তব্য অবহেলা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে আমি সরেজমিনে তদন্তে এসেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট আসামী গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে। আপনারা কখনও কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। বিলম্ব হলেও খুনিরা কোন ছাড় পাবে না। আশা করছি খুব শীগ্রই একটি সাফল্য আসবে। এই বলে তিনি এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেন। তিনি ডাবল মার্ডারের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে তার পক্ষে সার্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রবিবার দুপুরে চৈতননগর এলাকার স্কুল ছাত্র সুমেল হত্যাকান্ডের মূল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চৈতননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে পুলিশ সুপার এলাকাবাসীকে নিয়ে এক বৈঠকে মিলিত হন। এসময় তিনি বিভিন্ন কৌশলে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে স্বাক্ষ্যপ্রমাণাদি গ্রহণ করেন। প্রত্যেক্ষদর্শী স্বাক্ষীরা জানান, সুমেল হত্যাকান্ডের আগে এসআই ফজলু চাউলধনী হাওরে সাইফুলের বাড়ীর পাশেই ছিল। ঘটনার পর ওসি শামীম মূসা ঘটনাস্থলে এসে চিৎকার করে সাইফুলকে টেলিফোন করে বলেন, মার্ডার করে এখনও কি দাড়িঁয়ে আছেন। তাড়াতাড়ি পালিয়ে যান, বিপদ হয়ে যাবে। মানুষের কান্নাকাটি হুড়াহুড়ি সুযোগে ঘটনাস্থলের দিকে এলাকাবাসী যেতে পুলিশ বাধা দেয় এবং লাঠিচার্জ করে। এই সুযোগে গুলিতে নিহত সুমেল ও আহতদের রক্তের আলামত নষ্ট করে দেয় পুলিশ ও কয়েকজন আসামী। স্বাক্ষীদের এমন স্বাক্ষ্য শুনে পুলিশের এই কর্মকর্তা বিস্মিত হয়ে পড়েন।
লর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, ঘটনার সংবাদ ও পারিপার্শি¦ক অবস্থায় যা ধারনা করেছিলাম। সরেজমিনে ঘটনাস্থলে এসে তা প্রমাণ পেয়ে গেলাম। তিনি বলেন, চাউলধনী হাওরে আর কোন বাহিনী মাথাচাড়া দিয়ে দাড়াতে পারবে না। পুলিশ সুপারের নিকট ওসি শামীম মূসা ও এসআই ফজলুর বিরুদ্ধে এবং সুমেল হত্যাকান্ডের প্রত্যেক্ষদর্শী ১০জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুমেল হত্যা মামলার বাদী ইব্ররাহিম আলী সিজিল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল কালাম, দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আরিফ উল্লাহ সিতাব, ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মজিদ, সাবেক ইউপি সদস্য সামছুদ্দিন, নজির উদ্দিন, মাস্টার বাবুল মিয়া, দয়াল হত্যা মামলা বাদী আহমদ আলী, আলা উদ্দিন, হোসেন মিয়া, কুতুব উদ্দিন, আনছার মিয়া, জয়নাল আবেদিন, আতাউর রহমান আতা, আফজল হোসেন, ইসলাম উদ্দিন, আব্দুল করিম, দুলাল মিয়া, ইন্তাজ আলী, কাইয়ুম, শাহিন মিয়া, লিটন মিয়া, ছুরত মিয়া, ফারুক মিয়া, আলতাব আলী, আব্দুল তাহিদ, মনির উদ্দিন, এমরান হোসেন, আকরাম হোসেন, শহিদুল, মকবুল হোসেন, সেবুল মিয়া, সেলিম মিয়াসহ এলাকার শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।
গত ১ মে স্কুল ছাত্র সুমেল, তার পিতা মানিক, চাচা মনির উদ্দিনসহ বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে সাইফুল বাহিনী গুরুত্বরজখম করলে হাসপাতালে সুমেল মারা যায়। হত্যার ঘটনার প্রায় সপ্তাহখানেক পূর্ব থেকে সাইফুল দিবানিশি থানায় বসে ওসি শামীম মূসা সহ অন্য কতেক কর্মকর্তাদের সাথে সলাপরামর্শ করে নজির ও মানিক মিয়ার জমিতে ভেকো মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করে। এতে জমির মালিক বাধা দিলে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাখির মতো গুলিকরে গুলিবিদ্ধ করা হয়।
এ ঘটনার পূর্বে এলাকাবাসী একাধিক বার লিখিত ও মৌখিকভাবে অস্ত্র উদ্ধারের আবেদন করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে এই অস্ত্র দিয়েই সুমেলকে হত্যা ও তার বাবা চাচাকে গুলি করা হয়।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *