বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে এবার নারী অপহরনের মামলা

অপরাধ বিশ্বনাথ
শেয়ার করুন

সিজিল নামের আরেক পিএস’ও অভিযোক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার বিরুদ্ধে এবার সুমা বেগম (২০) নামের এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রির মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।

এ অভিযোগে রোববার (৮ অক্টোবর) সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট প্রথম আদালতে মামলা দায়ের করেছেন সৈয়দা বেগম (৪৩) নামের এক নারী। তিনি পৌর শহরের পাশ্ববর্তি পূর্ব-চান্দশির কাপন গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সৈয়দ জুবেদ মিয়ার স্ত্রী। তার দায়ের করা বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং ৩৯১/২০২৩ইং।

মমালায় তিনি তার বিবাহিতা মেয়ে সুমা বেগমকে অপহরণ করে গুমের অভিযোগ এনেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া ও তার নতুন পিএস উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রচার সম্পাদক সিজিল মিয়ার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় সিজিল মিয়াকে প্রধান আসামি ও উপজেলা চেয়রাম্যান নুনু মিয়াকে ২য় আসামি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত সিজিল মিয়া উপজেলার বাইশঘর গ্রামের খেজুর মিয়ার ছেলে।

ওইদিন শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক নুসরাত তাসনিম মামলাটি তদন্তের জন্য সিলেটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিাই’কে দায়িত্ব প্রদান করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ। তিনি জানান, মামলাটি প্রথম আদালতে করা হলেও শুনানী হয়েছে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩য় আদালতে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী সৈয়দা বেগম বাসা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে কালিগঞ্জ বাজারের মহিলা মাদ্রাসায় গিয়ে বাবুর্চির কাজ করেন। আর তার স্বামীও একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। যেকারণে দিনের বেশিরভাগ সময় তারা দু’জনই বাইরে থাকেন। এই সুযোগে একই বাসার অপর ভাড়াটিয়া সিজিল মিয়া তাদের মেয়ে সুমা বেগমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। একপর্যায়ে উপজেলা চ্যেয়ারম্যানের প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক তার মেয়েকে বিয়ে করেন সিজিল। এরপর কাবিননামা না দেওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়াকে জানালে তিনি বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। তারপরেও কাবিননামা না দেওয়ায় গত ২১ সেপ্টেম্বর মেয়ের উপস্থিতিতে জামাতা সিজিল মিয়ার ঘরে গিয়ে এবিষয়ে কথা বলেন শাশুড়ি সৈয়দা বেগম। সিজিলও পরদিন সকালে কাবিননামা দিয়ে দেবেন বলে জানান। কিন্তু পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় জামাতা সিজিলের ঘরে গিয়ে দেখেন তার মেয়ে সুমা বেগম ও সিজিল মিয়া ঘরে নেই।

তারপর তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানান। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান তার কথা না শুনে তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এতে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়া ও তার পিএস সিজিল মিয়া তার মেয়ে সুমাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছেন অথবা তার মেয়েকে খুনের পর লাশ গুম করে রেখেছেন।

এব্যাপারে সিজিল মিয়া বলেন, ২লাখ টাকা কাবিন দিয়েই তিনি ২০২১ সালে ৫ নভেম্বর বিয়ে করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি ব্যবসার কাজে বাইরে গেলে তার স্ত্রী সুমা বাসার জিনিসপত্র ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পরকীয় প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। এরপর তিনি তার শাশুড়ি সৈয়দা বেগমকে নিয়েও অনেক খুজাখোঁজি করেছেন। সর্বশেষ ৭ অক্টোবর শনিবার তিনি বিশ^নাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছেন বলে জানান।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেন, সিজিল মিয়ার বিয়ে কিংবা তার স্ত্রী পালিয়ে যাবার বিষয়ে বিন্দু পরিমান কিছুও আমার জানা নয়। একটি পক্ষ আমাকে ঘায়েল করতে এবং মান সম্মান নস্ট করতেই এসব মিথ্যা মামলা করাচ্ছে। আর যেসকল অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে আইনিভাবেই সেগুলোর মোকাবেলা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *